নওগাঁর ধামুরহাটের শহীদ আব্দুল জব্বার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের ১০ বিঘা জমি জবরদখল করার অভিযোগ উঠেছে। জনৈক জাকারিয়া মণ্ডল স্কুলের জমি দখল করার চেষ্টা করছেন কলে থানায় অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, শহীদ আব্দুল জব্বার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের সংলগ্ন ও বিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী মোট ১০ বিঘা জমি প্রথমে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ২ বছরের জন্য ও পরবর্তীতে আবারও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে ৩ বছরের জন্য লীজ নিয়ে ব্যবসায়িকভাবে ফুল চাষ শুরু করেন জাকারিয়া মণ্ডল। এরপর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জমি লীজ দেবেন না বলে জানিয়ে দেয়ার পরও জমিগুলো জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছেন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে তাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নোটিশ দেয়ার পরও যখন জমির দখল ছাড়েননি তখন পরপর দুইবার উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। তারপরও তিনি যখন জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে আছেন।
অভিযোগে আরও দাবি করা হয়, অভিযুক্ত জাকারিয়া মণ্ডল নিজের রোপণ করা ফুল গাছগুলো সুকৌশলে রাতের অন্ধকারে কেটে স্কুল কর্তৃপক্ষের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। এসব জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বাদী হয়ে ধামুরহাট থানায় লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ ও সভাপতি গোলাম কিবরিয়া দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, অভিযুক্ত জাকারিয়া মণ্ডল প্রতিষ্ঠানের জমি দীর্ঘ ৩ বছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে আছে। আমরা তাকে বারবার লীজ দেয়া জমিগুলো ছেড়ে দেয়ার জন্য অফিসিয়ালভাবে নোটিশ করে ব্যর্থ হয়েছি। তারপর তাকে পরপর দুই বার উকিল নোটিশও করা হয়েছে। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে তার রোপণ করাগাছগুলো রাতের আঁধারে কেটে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের উপর দোষ চাপিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাই বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সেই ফুল বাগানের পাশে বসবাসরত এ্যাডভোকেট মো. হাসানুজ্জামান, আব্দুর রহিম, নান্নু মিঞাসহ স্থানীয় অনেকে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, অভিযুক্ত মোঃ জাকারিয়া মণ্ডল অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিষ্ঠানের জমি ভোগদখল করে আসছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. জাকারিয়া মণ্ডল দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে মুঠোফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানের জমি আমি অবৈধভাবে দখল করিনি। প্রথমে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ২ বছর এবং আবারও ৩ বছর আমাকে জমি লিজ দেয়া হয়েছিল।
২০১৮ সালের পর আর আপনাকে জমিটি লিজ দেয়া হয়েছে এমন কোন কাগজপত্র বা কোন রশিদ আছে তা দৈনিক শিক্ষা ডটকমের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, না আমার কাছে তা নেই। এরপর আর কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি সরাসরি কথা বলতে চেয়ে লাইন কেটে দেন তিনি।
ধামুরহাট থানার ওসি আবদুল মমিন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে। বাদী ও বিবাদী উভয়ে পৃথক পৃথকভাবে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের কপির প্রাপ্যতা স্বীকার করে ইউএনও গণপতি রায় দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, আমি অভিযোগের কপি পেয়েছি। এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দেবেন তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ইউএন স্যার আমাকে বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন ইউএনও মহোদয় বরাবর জমা দেয়া হবে।