নরসিংদীতে গৃহবধূ তাছলিমার (২৮) শরীর এসিডে ঝলসে দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষক স্বামী আমান উল্লা। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ভোররাতে সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের পৌলানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে এসিডদগ্ধ তাছলিমা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
পৌলানপুর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার বড় মেয়ে তাছলিমার সঙ্গে ১৩ বছর আগে একই উপজেলার মহিষাশুরা ইউনিয়নের বথোয়াদি গ্রামের সফুর উদ্দিনের ছেলে মাদরাসা শিক্ষক আমান উল্লাহর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।
কয়েক মাস আগে আমান উল্লাহ গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এ খবর তাছলিমা জানতে পেরে বাবার বাড়ি পৌলানপুরে চলে যান। দ্বিতীয় বিয়ে করায় এবং স্ত্রী চলে যাওয়ায় আমান উল্লাহ তাছলিমার বাবার বাড়িতে যেত না। এদিকে বাবার বাড়িতে থাকার জায়গার সংকুলান না হওয়ায় তাছলিমা সন্তানদের নিয়ে পার্শ্ববর্তী ওলিউল্লার বাড়ির একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। আমান উল্লাহ তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা কেমন আছে সে খবর কোন দিন নেয়নি। এমনকি তাদের ভরণ-পোষণের জন্য টাকা-পয়সাও পাঠায়নি।
এদিকে হঠাৎ গত সোমবার আমান উল্লাহ শ্বশুরবাড়িতে যায় এবং কৌশলে শ্বশুর-শাশুড়ির হাতেপায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নেয়। তাছলিমার বাবা-মা জামাতার কথায় গলে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে তাকে রাতযাপনের অনুমতি দেন।
স্বামী-স্ত্রী রাতে খাবার সেরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাছলিমার চিৎকার শুনে তার বাবা-মা ওলিউল্লার বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান গলা থেকে পা পর্যন্ত এসিডে ঝলসে যাওয়া তাছলিমা যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।
আমান উল্লাহ ঘুমন্ত স্ত্রীর ওপর এসিড ঢেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান। তাছলিমার পাশে থাকা মেয়ে ইসরাতের ওপরও এসিড পড়ে।
মাধবদী থানার ওসি আবু তাহের আবদুল্লাহ বলেন, এ ব্যাপারে তাছলিমার বাবা খোরশেদ আলম থানায় অভিযোগ করেছেন। আমান উল্লাহকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।