স্বতন্ত্র মাধ্যমিক অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, আত্তীকরণ বিধিমালা ও অগ্রিম বর্ধিত বেতন প্রাপ্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সরকারি মাধ্যমিক স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (সমাস্বাশিপ)। সম্প্রতি এ দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরও স্মারকলিপির অনুলিপি জমা দেন তারা।
জানা যায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয় নব নির্বাচিত বাসমাশিস কমিটি। নির্বাচনে সমাস্বাশিপ আশানুরূপ ফল অর্জন না করলেও কর্মীরা শিক্ষকদের অধিকার ও বঞ্চনা নিরসনে সদা সোচ্চার। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে সাধারণ শিক্ষকদের অধিকার আদায়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বঞ্চনার কথা তুলে ধরছেন সমাস্বাশিপের কর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষকরাও উৎসাহ যোগাচ্ছেন সমাস্বাশিপ কর্মীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমাস্বাশিপের সদস্য সচিব মো. মনির হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি মাধ্যমিকের ইতিহাস বঞ্চনার ইতিহাস। দীর্ঘদিনের অবহেলিত সরকারি মাধ্যমিকের বঞ্চনা নিরসন সমাস্বাশিপের একমাত্র লক্ষ্য। সমাস্বাশিপের লক্ষ্য নির্বাচন কেন্দ্রিক নেতা হওয়া নয়, সমাস্বাশিপ বঞ্চিত শিক্ষকদের জন্য কাজ করার প্ল্যাটফর্ম। সমাস্বাশিপ বাসমাশিসের সাথে একাত্ব হয়ে শিক্ষকদের বঞ্চনা নিরসনে সদা তৎপর থাকবে। গত নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, সমাস্বাশিপ শিক্ষকদের অধিকার আদায়ে অঙ্গীকারবদ্ধ৷
জানা যায়, সরকারি মাধ্যমিকে নব নিয়োগকৃত শিক্ষকরা এবং ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পর বিএড প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষকরা অগ্রিম বর্ধিত বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ থাকা সত্বেও হিসাব রক্ষণ অফিস আদেশ প্রত্যাখ্যান করছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমাস্বাশিপের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মনোরঞ্জন ধর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের আদেশের বলে সরকারি মাধ্যমিকের প্রায় ৯ হাজার শিক্ষক অগ্রিম বর্ধিত বেতন পেলেও বাকি ১ হাজার শিক্ষক এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাউশি, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক অফিসে আমরা বিষয়টি তুলে ধরেছি। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে৷
সমাস্বাশিপের আহ্বায়ক মো. আফতাবুর রহমান হেলালী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি মাধ্যমিকের সংকট নিরসনে সমাস্বাশিপ সর্বদাই বঞ্চিত শিক্ষকদের পাশে থাকবে৷
মাধ্যমিকের গতিশীলতা এবং এসডিজি বাস্তবায়নে জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে মাধ্যমিকের আলাদা অধিদপ্তরের প্রয়োজনীতা তুলে ধরেন সমাস্বাশিপের সিনিয়র কার্যনির্বাহী সদস্য কানিজ সালমা৷ তিনি বলেন, স্বতন্ত্র আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা হলে সরকারি মাধ্যমিকে নতুন পদ সৃজনসহ পদোন্নতি জটিলতা দূর হবে। ফলে অধিদপ্তরে সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে এবং আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন জাতি গঠনে আলাদা অধিদপ্তর সময়ের দাবি।
বর্তমানে সাধারণ শিক্ষকদের উদ্বেগের নতুন কারণ সরকারিকৃত স্কুলের শিক্ষকদের আত্তীকরণ। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের বাতিলকৃত বিধিমালা দিয়ে আত্তীকরণ কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে সমাস্বাশিপের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুজ্জামান তোতা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সপ্তম সংশোধনীতে সামরিক শাসকের সকল অধ্যাদেশ বাতিল করা হলেও, অজ্ঞাত কারণে বাতিলকৃত বিধির মাধ্যমে আত্তীকরণ সম্পন্ন হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী উদ্যোগ বাস্তবায়নে সমাস্বাশিপ সদা প্রস্তুত। সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকরা চায় নতুন আত্তীকরণ বিধি প্রণয়নের মাধ্যমে এই কার্যক্রম গতিশীল করা হোক। কলেজের আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সর্বশেষ সংশোধন করা হলেও, মাধ্যমিকের আত্তীকরণ বিধি সংশোধন করা হয়নি।