পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. দেলোয়ার হোসেন। ৮ সেপ্টেম্বর তার শেষ কর্মদিবস। অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে উপঢৌকন হিসেবে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সংগঠনের কাছে তিনি আবদার জানিয়েছেন স্বর্ণের চেইনের। তার আবদার অনুযায়ী বিদায়ী অধ্যক্ষের জন্য চাঁদা তুলে স্বর্ণের চেইন কিনছেন বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা তাকে ২২ হাজার টাকা দামের একটি স্বর্ণের চেইন উপহার দিয়েছেন। আবদার অনুযায়ী আগামি ৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষক পরিষদের নেতাদের থেকে আরও একটি স্বর্ণের চেইন নেবেন অধ্যক্ষ। পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ১৮টি বিষয়ে অনার্স এবং ৫ টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে এ কলেজে।
ওই কলেজের সাবেক একজন শিক্ষক বর্তমানে শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে জানিয়েছেন, জামাতপন্থী অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. দেলোয়ার হোসেন পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজে যোগ দেয়ার পর থেকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তার স্থানীয় বাড়ি কলেজের পাশে। তাই কোনো শিক্ষক অধ্যক্ষের অনিয়মের প্রতিবাদ করতে সাহস দেখান না। বিদায়ের আগ মুহুর্তে তিনি প্রতিটি অনুষদ থেকে পৃথকভাবে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ৫ মাস পূর্বে তিনি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন। এর আগে তিনি উপাধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেয়ার পর কলেজের বিভিন্ন সামগ্রী না কিনে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে সেই টাকা আত্নসাত করেন। কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন তার স্ত্রী। এছাড়া কলেজের বিবিধ ও উন্নয়ন খাতে কাজ না করে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। আর অধ্যক্ষের এ কাজে সহযোগিতা করেন পদার্থ বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজেদুল ইসলাম।
স্বর্ণের চেইন নেয়ার বিষয়টি দৈনিকশিক্ষার কাছে অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. দেলোয়ার হোসেন। কারও কাছে স্বর্ণের চেইন আবদার করেননি। আর কারও কাছ থেকেই তিনি স্বর্ণের চেইন গ্রহণ করেননি। আর বিদায় অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার বলে জানান অধ্যক্ষ।
ভুয়া বিল ভাউচার এবং কলেজের বিবিধ ও উন্নয়ন খাতে দুর্নীতির অভিযোগটিও সঠিক নয় দাবি করে প্রফেসর মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকলে অনেকেই এ ধরণের অভিযোগ করে থাকেন।