সরকারের নীতিমালা এবং হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে বগুড়ার স্কুল ও কলেজগুলোতে ভর্তির সময় সেশন ফি এবং উন্নয়ন ফি’র নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। হাইকোর্টের রিটকারী বলছেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা সদরে সেশনফিসহ সব মিলিয়ে দুই হাজার টাকার বেশি আদায় করা যাবে না। কিন্তু ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। অভিভাবকদের দাবি, শিক্ষার নামে বাণিজ্য বন্ধ করা হোক।
সরকারি নীতিমালায় ১১ এর ২ অনুচ্ছেদে এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত এবং এমপিওবহির্ভূত স্কুল ও কলেজগুলোতে ভর্তিতে সেশনফি সহ সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় ৫শ, উপজেলা পর্যায়ে ১ হাজার, জেলা সদরে ২ হাজার এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করা যাবে না বলে নির্দেশনা রয়েছে।
এছাড়া বগুড়ার এক অভিভাবকের করা রিটে হাইকোর্ট সরকারি নীতিমালা মানাসহ আরো কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে নির্দেশ দেন। কিন্তু বগুড়ার স্কুলগুলোতে এই নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ খোদ রিটকারীর।
রিটকারী আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, 'এরা কোন শক্তিধর যে এরা হাইকোর্টকে অবমাননা করে সেশন ফি বেশি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে।'
অভিভাবকদের অভিযোগ, সরকারি নীতিমালা না মেনে শিক্ষার নামে বাণিজ্য চলছে।
এক অভিভাবক বলেন, ‘যখন সরকারি নীতি অনুযায়ী টাকার কথা বলি তখন তারা বলে আমাদের স্কুল এমপিভুক্ত না।’
স্কুলের প্রধানরা বলছেন, নীতিমালা মতো চলতে গেলে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শুধু আংশিক এমপিওভুক্ত হয়ে এত কম টাকা নিলে স্কুল চালানো আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।’
বগুড়ার ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু জাফর বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া টাকা দিয়েই প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যয় মিটানো হয়।’
আর বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. ফয়েজ আহম্মদ বলছেন, নীতিমালা না মানলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, 'সেশন ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া যেন বন্ধ রাখে। এটা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।'
রিটের অন্তর্ভুক্ত বগুড়ায় ১২টি স্কুল এবং স্কুল ও কলেজসহ অন্য বিদ্যালয়-কলেজগুলোকে সরকারি নীতিমালা মেনে চলতে বিচারপতি জে বি এম হাসান এবং বিচারপতি মো. খায়রুল আলম ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর একটি আদেশ দেন। আর জেলা প্রশাসককে এই আদেশ অনুসরণ করতে বলা হয় ওই নির্দেশনায়।