সাতক্ষীরার কলারোয়া ছলিমপুর হাজী নাছির উদ্দীন কলেজে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় কলেজের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে অস্বচ্ছ ম্যানেজিং কমিটি বাতিল, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও কলেজের আয়-ব্যয়সহ সকল দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া কলেজের অতীত ঐহিত্য ও সুনাম ফিরিয়ে আনাসহ শিক্ষকদের নির্দিষ্ট সময়ে কলেজে উপস্থিতি ও পাঠদান ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিও করা হয়।
অতিতের ন্যায় বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ এবং পরীক্ষার ফি মওকুফ করাসহ স্থানীয়দের ম্যানেজিং কমিটিতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়াসহ ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয় এ মানববন্ধনে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুল আহাদ, মিঠু সরদার, কলেজছাত্র আল-আমিন, রুহুল আমিন খান, মো. জনি প্রমুখ।
জানা গেছে, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে কলেজটিতে নানা সংকট শুরু হয়। ওই সময় অবৈধ নিয়োগ ও জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরির কারণে ১২ শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষকদের বেতন বন্ধের জন্য ওই সময় কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মমিনকে দায়ী করে মারপিট করে কলেজ থেকে তাড়িয়ে দেয় ক্ষুব্ধ ওই শিক্ষকরা।
এরপর থেকে নানা সংকটের মধ্যে পড়ে কলেজের সার্বিক কার্যক্রম। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কয়েক দফায় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি এনাম হকসহ কলেজের শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকও করেন। কিন্ত সে সময়ও কোনো সমাধান না হওয়ায় চরম সংকটে পড়ে কলেজের কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এনাম হক কলারোয়ার ছলিমপুর গ্রামে তার পিতা হাজী নাসিরউদ্দিনের নামে ব্যক্তিগত অর্থে গড়ে তোলেন হাজী নাসিরউদ্দন কলেজ। সম্পূর্ণ বিনা বেতনে ফ্রি বই দিয়ে শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করা হয় এ কলেজে। এর পর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়। শিক্ষার পরিবেশ ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা ওই কলেজে ভর্তি হত। জেলার মধ্যে হাজী নাসিরউদ্দিন কলেজ পরীক্ষার ফলাফলে সুনাম অর্জন করে। কিন্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা সভাপতিসহ স্থানীয়রা পরিচালনা পরিষদে দায়িত্বে না থাকায় কমে গেছে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা।