একের পর এক অনিয়মের ঘটনায় হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অমান্য করে এবার বিদ্যালয়টিতে সহকারী প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়ে জ্যেষ্ঠতা ডিঙিয়ে ৫ম অবস্থানে থাকা এক শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী আছমা বেগমসহ ১৭ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যালয় পরিদর্শক পৃতিশ কুমার সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান জিয়াউল হক।
অন্যদিকে ১৯৯৫ সালে নিয়োগ পাওয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী আছমা বেগমের নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন খোদ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোবারেজ। এদিকে সরকারি প্রজ্ঞাপনের নিয়ম বহির্ভূতভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের স্বাক্ষরে জুলাই মাসের বেতন ও ঈদুল আজহার উৎসব ভাতার কাগজপত্র ব্যাংকে পাঠালে ব্যাংক তা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী জমা দেয়া হয়নি বলে আটকে দেয়। ফলে শিক্ষকরা ঈদে বেতনভাতাদি ও উৎসব ভাতা থেকে বঞ্চিত থাকেন।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে দেয়া শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জিন্নাত আক্তার ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি (সাবেক প্রধান শিক্ষকের স্বামী) আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোবারেজের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে বিভিন্ন দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সাধারণ শিক্ষক কর্মচারীদেরকে মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে দুর্নীতির একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়।
এতে প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে হয়রানি করার জন্য ১১ জন সাধারণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার একটি মানহানি মামলা দায়ের করেন। এমনকি গত ৩১শে জুলাই উচ্চ আদালত কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম চলাকালে সাবেক প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের স্বামী কতিপয় বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে বিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। এ ঘটনাটি ছাত্রীদের মধ্যে জানাজানি হলে ছাত্রীরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলও করে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক পৃতিশ কুমার সরকার মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে জানান, তাঁরা হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অচিরেই এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে চিঠি পাঠাবেন।
সূত্র : মানবজমিন