কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোর শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উপজেলার পিতলগঞ্জ ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষক আবুল বাশারকে গত রোববার ইংরেজি পরীক্ষার দিন এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। হোসেনপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওয়াহিদুজ্জামান ওই মাদরাসা শিক্ষককে এ দণ্ড দেন।
এ ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার হয়ে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে তারা প্রকৃতই ওই সব মাদরাসার শিক্ষার্থী কি না, তা যাচাই করে দেখছে। এবার উপজেলার ১৩টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা থেকে ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে।
শুধু পিতলগঞ্জ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নয়, উপজেলায় এ ধরনের যতগুলো মাদরাসা রয়েছে, প্রায় সব কটির বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের বেশির ভাগই ভুয়া এবং বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এমপিওর লোভে মাদরাসাগুলো অবকাঠামো ও ছাত্র-ছাত্রী না থাকার পরও ভালো ফলের জন্য আশপাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার্থী হিসেবে কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা শিক্ষা অফিস স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি পরীক্ষার্থীদের তালিকা যাচাই করলে এ সুযোগ তারা পেত না। মাদরাসা থেকে যে তালিকা দেয়া হয়, সেভাবেই তারা পরীক্ষা নেয়।
এ বিষয়ে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন বলেন, ‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন কোন মাদরাসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ সময় তিনি শিক্ষা অফিসগুলো এর দায় এড়াতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন।