হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ১২ বছর ধরে কলেজে প্রবেশ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন একজন উপাধ্যক্ষ। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন মিলনাতনে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার মুরাদনগরের হায়দরাবাদ বেগম জাহানারা হক ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ মোতাহের হোসেন ভুইয়া এমন অভিযোগ করেন।
তার দাবি, উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেলেও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সামছুল হক, অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক (ব্যবস্থাপনা বিভাগ) আবদুল মোমেন সরকার ও ব্যবস্থাপক ফারুক সরকারের ষড়যন্ত্রের কারণে তিনি কলেজে যেতে পারছেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বোর্ড, স্থানীয় জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অফিসার একাধিক নির্দেশনা দিলেও তা গ্রহণ করছে না কর্তৃপক্ষ। এমনকি তাদের কারণে বেতন-ভাতাও বন্ধ থাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে মোতাহের হোসেন বলেন, ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে ওই কলেজে যোগদান করেন। ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক পদে প্রমোটেড হন।
২০০৯ সালে অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান অন্য কলেজে চলে যাওয়ার সুবাদে তৎকালীন কলেজ গবর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। এর মধ্যে গবনির্ং বডির সভায় প্রথমে উপাধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত হলে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি জানান, এর মধ্যে এমপিওভুক্তির জটিলতা দেখা দিলে হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জুন হাইকোর্ট তার পক্ষে রায় দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে এমপিও ভুক্ত করার নির্দেশ দেন। পরে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে উপাধ্যক্ষ পদে তার এমপিও হয়ে যায়। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে তিনি কলেজে যোগদান করতে পারছেন না। কলেজে প্রবেশ করলে তাকে হত্যা করা হবে বলেও ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। এই ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে একাধিক জিডি করা হয়েছে। এই অবস্থায় চাকরি ফিরে পাওয়া ও বকেয়া বেতন-ভাতা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন উপাধ্যক্ষ মোতাহের হোসেন ভুইয়া। সংবাদ সম্মেলনে তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান বলেন, কলেজে নিয়মিত না হওয়ায় মোতাহের হোসেন ভুইয়াকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবগত রয়েছে। আর বরখাস্তকৃত শিক্ষকের বেতন-ভাতা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই বন্ধ থাকবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ সকল আইন মেনে তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।