নওগাঁর ধামইরহাটে মাত্র ১০ টাকায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দিচ্ছেন একজন হোটেল ব্যবসায়ী। খাদ্যতালিকায় থাকে ভাত, ডাল, ডিম, ছোট মাছসহ সবজি। আর এ খাবার পেতে হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই স্কুল ড্রেস থাকতে হবে।
জানা গেছে, উপজেলার চকময়রাম গ্রামের আদর্শ হোটেলের মালিক মো. মতিয়ার রহমান চার মাস ধরে মাত্র ১০ টাকায় শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুরের খাবার বিক্রি করেন। এ হোটেল থেকে চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন খাবার খায়। টিফিনের সময় হোটেলে খাবার খেতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
হোটেল মালিক মতিয়ার বলেন, গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষার্থী সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে আসে। এ গরমের মধ্যে বাড়ি থেকে সবার পক্ষে খাবার আনা সম্ভব হয় না। আবার অনেকের বাড়িতে খাবার রান্না করাও সম্ভব নয়। অনেক শিশু বহু দূর থেকে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসে। আবার বেশি টাকা দিয়ে দুপুরে ভাত কিনে খাওয়ার সামর্থ্যও অনেকের নেই। তারা টিফিনের সময় আশপাশের দোকান থেকে তৈলাক্ত খাবার কিনে খায়। এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। এর বদলে দুপুরে এক প্লেট ভাত কিনে খেতে পারলে তাদের শরীরটা ভালো থাকে। এমন চিন্তা থেকে শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকার প্যাকেজ খাবার চালু করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমার আদর্শ হোটেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বসার জায়গা নেই। আর মাত্র ১ ঘণ্টার টিফিনের অল্প সময়ে এতজন শিক্ষার্থীর বসার জায়গা দিতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে দুপুরের খাবার খায়। তবে ১০ টাকার খাবার খেতে হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই স্কুল ড্রেস থাকতে হবে।
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আহাদ, মুশফিকুর রহমান, শিহাব বলে, আমরা রোজ সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে আসি। অনেক সময় সকালে ঠিকমতো খাওয়া হয় না। আবার বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসাও সম্ভব হয় না। আদর্শ হোটেল চালু হওয়ার পর থেকে মাত্র ১০ টাকায় পেট ভরে দুপুরের খাবার খেতে পারি। এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো। তা ছাড়া এখানকার খাবারের গুণগত মান অনেক ভালো।
এ বিষয়ে চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম খেলাল-ই-রব্বানী বলেন, দ্রব্যমূল্য যেখানে ঊর্ধ্বগতি, সেখানে হোটেল ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র ১০ টাকার খাবার দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যা সত্যিই বিস্ময়কর। শিক্ষার্থীদেরও সুবিধা হয়েছে।