বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে তিনটি ছাত্রাবাস ১০ বছরেও চালু করা যায়নি। ১০ বছর আগে সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রদের আবাসিক হল মেরামতে সরকারকে ‘মাশুল’ গুনতে হচ্ছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এই টাকায় ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি আবাসিক হলের দুটি সংস্কার সম্ভব হলেও অপর হল থেকে আরো প্রায় ১ কোটি টাকার মালামাল খোয়া যাওয়ায় তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর আবাসিক হলে সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের জেরে কলেজের শহীদ আখতার আলী মুন হল, শহীদ তিতুমীর হল এবং শের-ই-বাংলা হলে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হয়। এতে সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় তিনটি হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আখতার আলী মুন হলে ৯৬, শহীদ তিতুমীর হলে ৮০ এবং শের-ই-বাংলা হলে আসন সংখ্যা ৪০ হলেও এই তিনটি হলে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর আবাসিক সংকট নিরসন হতো।
এদিকে বন্ধ তিনটি হলের মধ্যে শের-ই-বাংলা হল সংস্কার উপযোগী না হওয়ায় তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে শহীদ আখতার আলী মুন হল এবং শহীদ তিতুমীর হল শিগিগর খুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কলেজ প্রশাসন।
হল খুলে দেওয়ার আগে ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে আখতার আলী মুন হল সংস্কার কাজ করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। সংস্কার ছাড়াও ঐ হলে বিদ্যুত্, পানি এবং ছাত্রদের বিছানাপত্র ও আসবাব সরবরাহ করা হচ্ছে।
অপরদিকে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শহীদ তিতুমীর হল সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছর। এই হলে আসবাব, বিছানাপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলতাফ হোসেন বলেন, দুটি হল সংস্কারে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এর মধ্যে শহীদ আখতার আলী মুন হল এর সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে এবং শহীদ তিতুমীর হলের কাজ চলছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আবাসিক ঐ তিন হল বন্ধ ঘোষণার পরপরই নিরাপত্তা প্রহরীদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে কলেজ প্রশাসন। এতে করে ভবনের ইট আর দেওয়াল ছাড়া প্রায় সবই খোয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরান বগুড়া এলাকার শের-ই-বাংলা হলে। এই হলের টিনশেডের আধাপাকা ভবনের আসবাবপত্র, দরজা-জানালা, জানালার গ্রিল, বৈদ্যুতিক পাখা, যাবতীয় বৈদ্যুতিক ও পানি সরবরাহের সরঞ্জাম, টয়লেটের ফিটিংস এমনকি ভবনের ছাউনির ঢেউটিন পর্যন্ত খোয়া গেছে। কলেজ প্রশাসনের দাবি, এই হল থেকে খোয়া যাওয়া মালামালের মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী বলেন, ‘বন্ধ তিনটি হলের মধ্যে শের-ই-বাংলা হল সংস্কার অনুপযোগী হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি বছর শেষে শহীদ আখতার আলী মুন ও শহীদ তিতুমীর হল খুলে দেওয়া হবে। আসবাবপত্র সরবরাহ করা হলে অচিরেই চালু হবে দুটি হল।