মা-বাবার পরেই যদি কেউ আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকেন তাহলে তিনি হলেন আমাদের শিক্ষক। কথায় আছে- গুরুই শিষ্যের জীবনের মূল ভিত তৈরি করে দেন। সঠিক শিক্ষা দান করে যেমন জীবনের দিশা দেখান তেমনই অসুবিধায় পড়তে বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাতও। ঠিক তেমনই আজ থেকে বহু বছর আগে ভারতের কেরলের ত্রিসূরের চেরপ্পু হাইস্কুলের শিক্ষক কে ডব্লিউ অচ্যুতাওয়ারিয়র তেমনই করেছিলেন। ছাত্র দীনেশ তখন ছিলেন ছোট্ট। আর সে সময় তাকে ১১ টাকা ৩৫ পয়সা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনি। আর ৩০ বছর পর সেই টাকারই দশ হাজার গুণ ফেরত দিল অচ্যুতাওয়ারিয়রের সেই ছাত্র।
জানা গেছে, একদিন দীনেশের এক বন্ধু খেলতে যাওয়ার আগে তার কাছে ১১ টাকা ৩৫ পয়সা রাখতে দেয়। ওই টাকা দিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ির জন্য খাবার কিনতে হবে। কিন্তু দীনেশ সেই টাকাটি হারিয়ে ফেলেন। শেষে বন্ধুকে টাকা ফেরত দিতে অপারগ হওয়ায় কেঁদেও ফেলেন। এমন সময় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন অচ্যুতাওয়ারিয়র।
গোটা ঘটনাটি শোনার পর তিনি ওই ১১ টাকা ৩৫ পয়সা দীনেশকে দিয়ে তার বন্ধুকে দিয়ে দিতে বলেন। পরে বাড়ি গিয়ে দীনেশ তার বাড়ির লোককে সমস্তটা জানায়।
দীনেশের বাবা তখন নিজের রোজগার থেকেই ওই টাকা দীনেশকে দিয়ে সেটি তার শিক্ষককে দিতে বলেন। পরদিন দীনেশ সেই টাকাটি ফেরত দিতে গেলে অচ্যুতাওয়ারিয়র তা নিতে অস্বীকার করেন। দীনেশকে কাছে টেনে বলেন, ‘নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ওই টাকা আমাকে ফেরত দিও।’
এরপর কেটে যায় ৩০ বছর। সেদিনের ছোট দীনেশ আজ সৌদি আরবের বিরাট বড় ব্যবসায়ী। কিন্তু সেদিনের কথা আজও ভোলেননি তিনি। আর তাই তো এতদিন পর সেই পুরনো ‘ধার’ শোধ করলেন।
১১ টাকা ৩৫ পয়সার পরিবর্তে শিক্ষকের হাতে তুলে দিলেন তার ১০ হাজার গুণ বেশি টাকা। ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। আর এটা পেয়ে আবেগাপ্লুত অচ্যুতাওয়ারিয়র। এদিকে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ওই টাকাটি স্কুলের বাসের জন্য খরচ করা হবে।