প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক মানুষ গড়ার মূল কারিগর হলেও তাঁদের সম্মান ও প্রাপ্তি বাস্তবে অনেক নিম্ন অবস্থানে রয়েছে। ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেলে তাঁদের অবস্থান ১৫তম গ্রেডে, যা পিয়ন থেকে একটু ওপরে। বিভিন্ন অফিসের উচ্চমান সহকারী ও প্রধান সহকারীগণ, ক্যাটালগারগণ, নার্সগণ, কৃষি ডিপ্লোমাধারীগণ দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদাসহ অনেক উঁচু অবস্থানে রয়েছেন। অথচ শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনের জবাবে বলা হয়, আমাদের আর্থিক সচ্ছলতা নিম্নমধ্যবিত্ত পর্যায়ে আছে, সুতরাং সেবার মনোভাব নিয়েই সেবা দিয়ে যান। বৈষম্য নিরসনের জন্য ২০১৪ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কখনো তীব্র কখনো শিথিলভাবে সহকারীদের আন্দোলন চলছে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া যদি শিক্ষকের মর্যাদা, শিক্ষকের বঞ্চনার করুণ ইতিহাস যথাযথভাবে ফুটিয়ে না তোলে, তবে শুধু শিক্ষক নয়, গোটা শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংস ত্বরান্বিত হবে। সবারই পা পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায়। যাঁদের কলম সময়কে বদলে দেয়, বঞ্চিতকে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়, শোষণের বিরুদ্ধে যাঁরা ঝলসে ওঠেন, যাঁদের ক্যামেরা মানুষের দুঃখ-বঞ্চনার গল্প বলে, যাঁরা নীতিনির্ধারণে এবং আত্মমর্যাদাশীল জাতি গঠনে অনুঘটকের কাজ করছেন, প্রত্যেকের ঋণ শোধের সময় এসেছে। শৈশবের অ, আ, ক, খ শেখানো শিক্ষাগুরু, যিনি একটু একটু করে গড়েছেন শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সোপান, তাঁর মর্যাদা রক্ষায় এগিয়ে আসার সময় এখনই। প্রধানশিক্ষকদের ১০ম ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।
হুমায়ুন কবির : সহকারী শিক্ষক, কন্দর্পপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।