‘মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে ও পরামর্শে নুসরাতকে হত্যার জন্য গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানো হয়। এ জন্য ২৮ ও ৩০ মার্চ গ্রেফতারকৃত সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে কারাগারে দুই দফা আমি দেখা করি। ৪ এপ্রিল সকালে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা সাহেব মুক্তি পরিষদের সভা হয়। রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। সেখানে আমার উপর দায়িত্ব পড়ে মাদরাসার গেটের পাহারা দেওয়া।
সেখানে নুরুদ্দিন ও হাফেজ আবদুল কাদেরও ছিলেন। মাদরাসার ছাদে বোরকা পরে ছিলেন শাহাদাত, জোবায়ের ও জাবের। এছাড়া নুসরাতের সঙ্গে যান পপি ও মনি।’ আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে এসব কথা বলেছেন আবদুর রহিম শরীফ।
এ নিয়ে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। এর আগে নুরুদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, আবদুর রহিম শরীফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, মামলার অন্য দুই আসামি নুরুদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম এবং আবদুর রহিম শরীফসহ তিনজনের স্বীকারোক্তিতে একই ধরনের কথা উঠে এসেছে।
গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে আবদুর রহিম শরীফকে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে আবদুর রহিম শরীফকে পিবিআই গ্রেফতার করে।
দুইজন গ্রেফতার, কামরুন নাহার মনি ৫ দিনের রিমান্ডে: নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় গতকাল বুধবার পিবিআই আরো দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে মামলার অন্যতম আসামি শরীফ উদ্দিনকে সোনাগাজী থেকে এবং হাফেজ আবদুল কাদেরকে পুরান ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। হাফেজ আবদুল কাদের ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক। শরীফ মাদরাসার ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
এই দুই জনকে নিয়ে এ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো। এদিকে, নুসরাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার কামরুন নাহার মনির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুর একটার দিকে ফেনী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন এ আদেশ দেন। আবদুল কাদের সিরাজ উদ দৌলার অনুগত হিসেবে মাদরাসার হোস্টেলে বসবাস করতেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অর্থ ও মদদদাতা।