ডিগ্রি কলেজের ১৫৩ জন তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্তির নতুন উদ্যোগও ভেস্তে গেছে। এর আগে দুইদফায় উচ্চ আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখা দিয়ে এই ১৫৩ জন এমপিওভুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় দুর্নীতিবাজদের একটি সিন্ডিকেট। ২৪টি রিটের প্রেক্ষিতে আদালতের দেয়া রায়ের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সেই ১৫৩ জন তৃতীয় শিক্ষককে এমপিওভুক্তির অভিপ্রায়ে মঙ্গলবার (১৫ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সভা ডাকা হয়। সভায় উপস্থিত শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, “কোর্টের আদেশের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এমপিওভুক্তির চেষ্টা করা হয় একাধিকবার। ওই চক্রটি ফের তৎপর হয়ে আজকের সভা আহ্বান করেছে। আরো একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে শিগগিরই।”
তবে, মন্ত্রণালেয়ের অপর একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে জানান, “আজকের সভার সভাপতি ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন বুঝতে পেরেছেন যে, আদালত ১৫৩জন এমপিওভুক্তির নির্দেশ দেননি। বরং বিষয়টি মন্ত্রণালয় তথা সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, “সভাকে বোঝানো হয়েছে যে এই ১৫৩জনকে এমপিওভুক্ত করা হলে, এই দৃষ্টান্ত দেখিয়ে রাতারাতি ব্যাকডেটে আরও হাজার হাজার লোক নিয়োগ দিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য হাজির হবেন। তাই এদেরকে না দিয়ে বরং সারাদেশে মোট কত জন তৃতীয় শিক্ষক রয়েছেন তা জানার সিদ্ধান্ত হয় আজকের সভায়।”
জানা যায়, সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির এক নেতা, একজন নারী যুগ্ম-সচ্চিব শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার ড্রাইভার ও আইন শাখার দুজন কর্মকর্তা রয়েছেন।
এর আগে এই সিন্ডিকেটের খপ্পড়ে পড়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এই ১৫৩ জনকে এমপিওভুক্তির নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার যুগ্ম-সচিব নুসরাত জাবীন বানু সাক্ষরিত ২রা জানুয়ারির আদেশটি শিক্ষা অধিদপ্তেরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হলেও তা স্থগিত রাখা হয়েছে।
২রা জানুয়ারির আদেশে বলা হয়, “সরকারের সিদ্ধান্ত যদিও অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে তারা সুবিধাদি ভোগ করবে কিন্তু তাদের অবসরের পর উক্ত পদের বিপরীতে কোন তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে না মর্মে যেহেতু একই প্রকৃতির ১০২ জন শিক্ষককে ইতিপূর্বে এমপিওভূক্ত করা হয়েছে সেক্ষেত্রে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়/নির্দেশনার আলোকে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়/আদেশ অনুযায়ী আলোচ্য রিট পিটিশনার ১৫৩ জন শিক্ষককেও এমপিওভুক্ত করা যেতে পারে”।
১৫৩ জন শিক্ষক ২০০১ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কলেজে নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। একইসঙ্গে এমপিওভুক্তির জন্য রিট মামলা চালিয়ে আসছেন। কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে তৃতীয় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেয়ার শর্তে নিয়োগ পেয়ে আসছেন তারা।