করোনা সঙ্কট কাটাতে নতুন করে দুই হাজার চিকিৎসক ও ছয় হাজার নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা কেটে গেল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমলাতান্ত্রিক কোন প্রক্রিয়ায় সরাসরি এডহক নিয়োগ হচ্ছেনা। দুই হাজার চিকিৎসক ক্যাডারে নিয়োগ হবে সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীন ৩৯তম বিশেষ বিসিএস থেকে। এছাড়া ছয় হাজার নার্স নিয়োগ হবে পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৮ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, মঙ্গলবার সরকারী কর্মকমিশনের জরুরী সভায় চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে ইতোমধ্যে নন-ক্যাডারের নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের জন্যও সুখবর এসেছে সভা থেকে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ অন্য দফতরে যে ৫৬৪ জন চিকিৎসককে ননক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল, সেই সুপারিশ বাতিল করেছে কর্ম কমিশন। মেধাতালিকা অনুযায়ী তারা এখন দুই হাজার চিকিৎসকের তালিকায় যুক্ত হবেন। ফলে এখন ক্যাডারেই নিয়োগ হচ্ছেন সেই চিকিৎসকরা।
কেবল চিকিৎসক নিয়োগে নেয়া হয়েছিল ৩৯তম বিশেষ বিসিএস। যেখানে ক্যাডারে নিয়োগের পর বিধিমালা অনুসারে নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশও এসেছিল। তবে সরকারের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ না হওয়ায় নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্তরা এখনও কাজে যোগ দিতে পারেনি। এবার তাদের যোগদানের পথ খুলতে যাচ্ছে। এর আগে সম্প্রতি এডহক ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে-স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশকে ঘিরে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি বেশ কিছু হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আমাদের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন।
এর জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করি এবং তাদের সুস্থতা কামনা করি। এ অবস্থায় যেহেতু নতুন নতুন হাসপাতাল করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রস্তুত করছি এবং বেশ কিছু চিকিৎসককে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়েছে, তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন দুই হাজার চিকিৎসক এবং ছয় হাজার নার্স আমরা নিয়োগের ব্যবস্থা করছি। আশা করি এই নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা আরও জোরদার হবে।
গত ২২ এপ্রিল এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক ডাকার পর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমন অবস্থায় সামনে চলে আসে [জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থঐষশ৩৮৯৮৩১৯০পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত চিকিৎসককে কাজে না লগিয়ে মন্ত্রণালয় কেন এডহক নিয়োগ দিতে[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থঐষশ৩৮৯৮৩১৯০ চায়। এমন জরুরী অবস্থার মধ্যে কিভাবে মন্ত্রণালয় নিয়োগ দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর মধ্যে পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত সেই ৫৬৪ চিকিৎসক নিয়োগের তালিকায় থাকতে চান বলেও দাবি ওঠে। বিষয়টি নজরে আসে চিকিৎসক নেতাদেরও।
দাবি ওঠে, আমলাতান্ত্রিক কোন প্রক্রিয়ায় নয়। বরং পিএসসির পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের থেকেই নিয়োগ দিলে সবচেয়ে দ্রুত ও মেধাবীদের নিয়োগ দেয়া হবে।
নন ক্যাডার থেকে সুপারিশ পাওয়া চিকিৎসকরা কদিন ধরেই সরকারের বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলার চেষ্টা করেছে। তারা করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও কাজ করতে চান বলে জানান। চিকিৎসকরা বলেন, ৩৯ বিশেষ বিসিএসে অপেক্ষমাণ তালিকায় তারা ছিলেন শুরুর দিকে। সেখান থেকে পিএসসি এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ৫৬৪ জনকে নন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করে। যাদের মধ্যে ৫৩৫ জনকে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে নিয়োগে প্রজ্ঞাপনও জারি করে পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সরকারের কাছে ওই চিকিৎসকরা আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ এবং অপেক্ষমাণ তালিকার চিকিৎসকদের মধ্য থেকে দুই হাজার জনকে নন ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পদ খালি থাকলে মেধা তালিকার ভিত্তিতে আগে নন ক্যাডারের মেধাতালিকা অনুযায়ী তারাই সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাওয়ার যোগ্য।
এমন অবস্থার মধ্যেই ৩৯ তম বিশেষ বিসিএস থেকে ২৭ এপ্রিল দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের জন্য কমিশনের কাছে সুপারিশপত্র পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।