বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে দীর্ঘদিন ধরে চাকরিপ্রার্থীদের প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। যারা শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আসছেন, তাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় সনদ দেয় তারা। এনটিআরসিএর ভুয়া ওয়েবসাইটে কৃতকার্য প্রার্থী হিসেবে তাদের নাম তুলে হাতিয়ে নেয় অর্থ।
আরও পড়ুন: এনটিআরসিএ-র ভুয়া ওয়েবসাইট!
প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক ফারহানা ইয়াসমিন জেনি এ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত আবেদন করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে। এরপর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সদস্যরা তদন্ত শুরু করেন। প্রতারকচক্রের সদস্য ইয়াছিন আরাফাত তানিমকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য দুই সদস্য পল্লী বিদ্যুতের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইমতিয়াজ নাইম শাওন ও খন্দকার রিফাতকে খুঁজছে পুলিশ।
সাইবার ক্রাইম বিভাগের ওয়েবসাইট অ্যান্ড ই-মেইল ক্রাইম বিভাগের ইনচার্জ সাইদ নাসিরুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় আসে তানিম। মহাখালীতে আইটি সলিউশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করত সে। ওই সময় একই প্রতিষ্ঠানের খন্দকার রিফাত ও নাইম শাওনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তখন ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে রিফাতের কাছ থেকে একটি ডোমেইন হোস্টিং নেয় তানিম। এরপর তারা এনটিআরসিএর দাপ্তরিক ওয়েবসাইটের আদলে হুবহু একটি প্রোফাইল পিকচার ও কার্যাবলির মিথ্যা তথ্যাবলি তৈরি করে প্রতারণা করে আসছিল। এ কাজে শুরু থেকে তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা করে শাওন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত তানিম জানায়, অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে তারা ফোন করত। তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের জন্য আলাদা লোক রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এনটিআরসিএর কর্মকর্তা পরিচয়ে বলা হতো- অর্থ দেওয়া হলে তাদের পাস করানো হবে, কৃতকার্য প্রার্থীর তালিকায় তাদের নাম ওয়েবসাইটে থাকবে।
একইভাবে আরও পাঁচটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হুবহু নকল করে প্রতারণা করে আসছিল এই চক্র।
এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছে এনটিআরসিএর কয়েকজন কর্মচারী। তারা দীর্ঘদিন যাবত এই চক্রটিকে প্রার্থীদের মোবাইল নম্বর সরবরাহ করে আসছিলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনটিআরসিএর একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘রোববার বিকেলে আমরা জানতে পারি একজনের গ্রেফতারের খবর। এরপর গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার কয়েকজনকে অফিসে দেখিনা।