৩৩ বছর আগে এমপিওভুক্ত হলেও কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি বরিশাল সদর উপজেলার চাদপুরা ইউনিয়নের দূর্গাপুর হাজী মোবারক আলী দাখিল মাদরাসায়। তবে এমপিও টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন মাফিক ছাত্র ম্যানেজ করে তাদের পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দিয়ে পাস করানো হয়। শিক্ষার্থী না থাকায় বিগত বছরের বিনামূল্যের বইগুলোও বিতরণ করা হয়নি। মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির হঠাৎ পরিদর্শনে গিয়ে এমন তথ্য পান। পরে তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া স্ট্যাটাসে সব তথ্য তুলে ধরেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্ট্যাটাসে বলা হয়: ‘আজ বরিশাল সদর উপজেলার চাদপুরা ইউনিয়নের দূর্গাপুর হাজী মোবারক আলী দাখিল মাদরাসার নিকট হতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সালাম দিতে যাওয়ার সময় ইচ্ছা হলো মাদরাসার কার্যক্রম দেখার। দুঃখের বিষয় মাদ্রাসাটির প্রথম হতে দশম শ্রেণি ঘুরে একটি শ্রেণিতে সম্ভবত (দশম শ্রেণি) দুইজন ছাত্র সহ একজন শিক্ষককে ক্লাস নিতে দেখা যায়। অপর শ্রেণি সমূহে গত কয়েক বছরে কোন ছাত্র- ছাত্রী হাজির হয়নি বলে জানা যায়, অর্থাৎ পাঠদান কার্যক্রম প্রয়োজন হয়নি। শিক্ষক লাইব্রেরিতে গিয়ে ১৪ জন শিক্ষকের মধ্যে দশ জন হাজির পেলাম।
ইউএনও আরও লেখেন, আমি ওই এলাকায় যাব তা শিক্ষকরা জেনে ফেলায় তারা অনেকেই উপস্থিত হলেও কোন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত হয়নি। শিক্ষক হাজিরা খাতা হাজিরায় ভরপুর থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসে ছাত্র হাজিরা খাতায় কোন ছাত্র হাজিরা দেখা যায়নি। প্রত্যেক শ্রেণিতে ২৫-৩০ জন করে ছাত্রের নাম থাকলেও অধিকাংশ নামই ভুয়া।অর্থাৎ অধিকাংশ নাম কাল্পনিক। এছাড়া অন্য স্কুলে পড়ে এমন ছাত্রের নাম খাতায় লিখে কিছু দিন পর পর তাদেরকে প্রায় শতভাগ হাজির দেখানো হয়। মাদ্রাসাটি ১৯৮৫ সনে স্থাপিত হয় ও ১৯৮৬ সনে এমপিওভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠার পর হতে কোন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি না হলেও এমপিও টিকানোর জন্য প্রয়োজন মাফিক ছাত্র ম্যানেজ করে তাদের পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে পাশ করানো হয়।মাদ্রাসার বিগত কয়েক বছরের সরকারি বই সমূহ বিতরণ করা হয়নি,কারণ বই নেয়ার কোন শিক্ষার্থী নেই।’