৫ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মাতৃভাষায় বই পাচ্ছে স্কুলে - Dainikshiksha

৫ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মাতৃভাষায় বই পাচ্ছে স্কুলে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

তিন বছর আগে থেকে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুরা মাতৃভাষার পাঠ্য বই পাচ্ছে। তবে এখনো অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এই সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে। পাঠ্য বই যারা পাচ্ছে তাদেরও অনেকের রয়েছে শিক্ষক সংকট। সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শরীফুল আলম সুমন​। 

জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় শিশুদের বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়। প্রথম বছর শুধু প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য বই মুদ্রণ করা হয়। দ্বিতীয় বছর ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণি এবং ২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তাদের পাঠ্য বই দেওয়া হয়। চলতি শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৯৮ হাজার ১৪৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৪টি পাঠ্য বই বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঠ্য বই রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা ছাড়াও হবিগঞ্জের বাহুবল; মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা ও কুলাউড়া; রংপুরের পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর; জামালপুরের বকশীগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবর্দী ও নেত্রকোনার দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষক থাকলেও অন্য জেলা বা উপজেলায় তেমন একটা নেই। ফলে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাংলায় পড়তে বাধ্য হচ্ছে।

এদিকে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাইরেও সাঁওতাল, খেয়াং, খুমি, লুসাই, মুন্ডা, মণিপুরি, মুরং, পাংখোয়া, হাজং, খাসিসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য নৃগোষ্ঠী রয়েছে, যারা এখনো মাতৃভাষায় পাঠ্য বই পায়নি। 

এনসিটিবি সূত্র জানায়, পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বই প্রণয়ন করতে গিয়েও তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কারণ এখন অনেক নৃগোষ্ঠীতে নিজেদের মধ্যেই ভাষা নিয়ে বিভক্তি রয়েছে। আবার অনেক ভাষা কেউ মুখে বলতে পারলেও লিখতে পারে না। অনেক ভাষার বর্ণই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হচ্ছি। পাঁচটি নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষার বইয়ের সঙ্গে সাঁওতাল ভাষায়ও বই করার কথা ছিল। কিন্তু তাদের নিজেদের মধ্যে লিপি নিয়ে বিভক্তি থাকায় সেটা এখনো করতে পরিনি। আমাদের মোট ১৯ থেকে ২০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠ্য বই প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু অনেকেই এসব ভাষা বলতে পারে, কিন্তু লিখতে পারে না। ফলে আমরা সঠিক বর্ণ খুঁজে পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সহায়তাও নিচ্ছি।’

রিয়াজুল হাসান আরো বলেন, ‘আমরা আস্তে আস্তে তৃতীয় শ্রেণিতেও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় বই দেব। তবে সেটা হবে শুধু বাংলা বইয়ের পরিবর্তে তাদের নিজেদের মাতৃভাষায় বই। এতে তারা পঞ্চম শ্রেণিতে উঠতে উঠতে বাংলা ভাষায়ও অভ্যস্ত হয়ে যাবে। তবে সমস্যা এখন শিক্ষক নিয়ে। কারণ আমরা জেনেছি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরও অনেক শিক্ষক বলতে পারেন, লিখতে পারেন না। এ জন্য আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা বলা ও লিখতে পারা শিক্ষককে অগ্রাধিকার দিতে পরামর্শ দিয়েছি।’

জানা যায়, বর্তমানে দেশে সরকারি হিসাবে ৩৭টি এবং বেসরকারি হিসাবে ৪৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেরই নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা রয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে তাদের নিজেদের মাতৃভাষায় পড়ালেখার সুযোগ এত দিন ছিল না। ফলে শিশুরা মায়ের মুখের ভাষা শুনে বড় হলেও স্কুলে এসে তাদের ভিন্ন ভাষার মুখোমুখি হতে হতো। এতে অনেক শিশুই পড়ালেখা শুরুর পরপরই ঝরে যায়। আবার এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা না থাকায় তা হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071189403533936