৬ মাসের ডিপ্লোমায় মাদরাসার আইসিটি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নির্দেশ - দৈনিকশিক্ষা

৬ মাসের ডিপ্লোমায় মাদরাসার আইসিটি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে এনটিআরসিএর ১ম নিয়োগ চক্রে বেসরকারি স্কুল-মাদরাসায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দিয়ে নিয়মিত পাঠদান করছেন ৩৪৪ জন শিক্ষক। আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ৬মাসের ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়ে তারা নিয়োগ পেলেও গত জুনে নতুন নীতিমালায় বদলে যায় বিধান। নতুন এমপিও নীতিমালায় ৬ মাসের ডিপ্লোমা শিক্ষক পদে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। তাই, এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না এ ৩৪৪ শিক্ষক। তবে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে মাদরাসায় ৬মাসের ডিপ্লোমা নিযে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া আইসিটি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। সব অঞ্চলের আঞ্চলিক উপপরিচালকদের এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র। সাথে পাঠানো হয়েছে আদালতের রায়ের কপি।  

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে নিয়োগ পাওয়া এসব প্রার্থী ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে আবেদন করেছিলেন। তাদের নিয়োগও সেবছর করা হয়েছিল। কিন্তু আইনি জটিলতায় তা আটকে যায়। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রচলিত নীতিমালায় ৬ মাসের ডিপ্লোমায় এমপিওভুক্তির গ্রহণযোগ্যতা ছিল।

সূত্র আরও জানায়, আদালতের রায়ের কপি আঞ্চলিক উপপরিচালকদের দপ্তরে পাঠিয়ে আদালতের রায়ের মতে কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ১৩ নভেম্বর এ সংক্রান্ত চিঠি আঞ্চলিক উপপরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। সাথে পাঠানো হয়েছে আদালতের রায়ের কপি। 

মামলার রায়ে, শুধুমাত্র ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এনটিআরসিএর ১ম চক্রে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের এমপিও কার্যক্রম ক্ষেত্রে ৬ মাসের ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ গ্রহণের বিষয়টি বলা হয়েছে। 

যদিও এনটিআরসিএর ১ম চক্রে অর্থাৎ ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে স্কুলে আইসিটি বিষয়ে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে এখনো মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি  মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। যদিও শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এসব শিক্ষকের এমপিও জটিলতা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুস্পষ্ট প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছিলেন শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। 

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, এ ৩৪৪ শিক্ষক আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে নিয়োগ পেয়েছেন। তাই, তাদের এমপিও দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।    

জানা গেছে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দিয়ে নিয়মিত পাঠদান করা ৩৪৪ জন শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জটিলতা নিরসনে গত ১৮ এপ্রিল অধিদপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এনটিআরসিএ থেকে মামলার রায়ের কপিসহ চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছিল।

জানা গেছে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও মামলার কারণে নিয়োগ সুপারিশ কার্যক্রম যথাসময়ে সম্পন্ন করা হয়নি। মামলা সম্পন্ন হয়ে গেলে রায়ের আলোকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো নির্দেশিকা মোতাবেক ফল চূড়ান্ত করা হয়। মামলার রায় অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি বা সমমান এবং সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার বিষয়ে ন্যূনতম ৬ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণযোগ্য হওয়ায় কম্পিউটার বিষয়ে ৬ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণধারীরাও নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। এ মামলার রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা কেবলমাত্র ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের প্রার্থীদের বেলায় প্রযোজ্য হবে, তার পরবর্তীদের বেলায় নয়। মামলার রায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রেক্ষিতে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের বেলায় ৬ মাসের প্রশিক্ষণের পূর্বের নীতি অনুসরণ করার জন্য অর্থাৎ মামলার রায়ের মতে কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছে এনটিআরসিএ।  

উল্লেখ্য, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এনটিআরসিএ প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদন করেছিলেন অনেক প্রার্থী। কিন্তু আইনি জটিলতায় আটকে যায় তাদের নিয়োগ সুপারিশ। জটিলতা নিরসন হলে গত ডিসেম্বরে ১০৯৫ জনকে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। এর মধ্যে ১০৪৭ জনকে সুপারিশপত্র দেয়া হয়। তবে তাদের মধ্য থেকে ৩৪৪ জন প্রার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন বলে জানা গেছে। তারা ৬ মাসের ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়ে কম্পিউটার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেছেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে ৬ মাসের ডিপ্লোমায় কম্পিউটার শিক্ষক পদে যোগদানের সুযোগ ছিল। কিন্তু ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জারি করা হয় নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো। নতুন সেই এমপিও নীতিমালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি অথবা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড হতে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-কম্পিউটার সায়েন্স বা সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। ৬ মাসের ডিপ্লোমায় যোগদান করায় এসব শিক্ষকের এমপিও আবেদন আঞ্চলিক উপপরিচালকরা ইএমআইএস সেলে অগ্রায়ন করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ জটিলতা নিরসনে অধিদপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছিল এনটিআরসিএ।  

এদিকে এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে গত ১ জুলাই মানববন্ধন করেছেন ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এনটিআরসিএ প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে নিয়োগ সুপারিশ পাওয়া স্কুল ও মাদরাসার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকরা। 

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004706859588623