আজ সোমবার ৬৮ বছরে পদার্পণ করেছে প্রাচ্যের ক্যামব্রিজখ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ অসংখ্য আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি (গণঅভ্যুত্থানের সময়) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে শহীদ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা। যিনি দেশের ইতিহাসে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। এ ছাড়াও রাবিতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন সংগ্রহের জন্য 'শহিদ স্মৃতি সংগ্রহশালা'।
অন্যান্য বছর দিবসটিকে উদযাপন করতে নানা কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন, সকল আবাসিক হল, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে শোভা পেত রং-বেরঙের আলোকসজ্জা, গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে সাজানো হতো নানা রকম আলপনা দিয়ে। তবে এবার
সেই আয়োজন থাকছে না। করোনার কারণে একেবারেই 'সীমিত পরিসরে' পালিত হবে দিবসটি। জন্মদিনের কেক কাটার মতো আয়োজনও থাকছে না এবার।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বড় ধরনের কর্মসূচি পালনে সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়াও সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অনেক শিক্ষার্থী ও কর্মচারী করোনা শনাক্ত হওয়ায় দিবসটি উদযাপনের আয়োজন কমানো হয়।
দিবসটি উদযাপন আয়োজনের দায়িত্বে থাকা রাবির প্রক্টর ও ভারপ্রাপ্ত ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, 'দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্তও হয়েছেন। সেজন্য আমরা একেবারে সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করব। এবার আয়োজনের মধ্যে থাকবে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও দিনের কোনো একসময় বৃক্ষরোপন।' তবে এসব কর্মসূচিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ব্যতীত অন্যদের উপস্থিত না হতে আহ্বান জানানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই থেকে সাতটি বিভাগে ১৫৬ জন ছাত্র এবং পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নয়টি অনুষদের অধীনে ৫৭টি বিভাগ এবং সাতটি ইনস্টিটিউটের অধীনে প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।