শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করায় সারা বিশ্বের হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনিস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে ইউনেস্কো ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের মর্ম তুলে ধরতে কাজ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ পালন ও ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তি পালনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদ থেকে পুরোপরি বেরিয়ে এসে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব।
আলোচনা সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। প্রধান আলোচক ছিলেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, ইউনেস্কোর প্রতিনিধি মিস সুন লে প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’র অন্তর্ভুক্ত হয়।
এই ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলনরত নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহান মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত করে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে জনযুদ্ধে পরিণত করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী বিজয়ী আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে। প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, যেকোনোভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ১ মার্চ এ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২ ও ৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালন করে।
এই পটভূমিতে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতায় তার বলিষ্ঠ কণ্ঠে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর দেয়া ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে এবং বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণার অনির্বান শিখা হয়ে অফুরন্ত শক্তি ও সাহস যুগিয়ে আসছে।