হার্বাট ডিলাগলি’র বয়স ৯৪ বছর। আর তার স্ত্রী ম্যারিলিন ফ্রান্সিস ডিলাগলি’র বয়স ৮৮ বছর। তাদের দীর্ঘ ৭১ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটেছে। একই দিনে তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। গত ১২ জুলাই মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথিবী ছেড়েছেন ডিলাগলি দম্পতি। যুক্তরাস্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৭২ বছর আগে একটি ক্যাফেতে ডিলাগলি যুগলের প্রেমময় জীবনের শুরু হয়েছিলো । এক বছর আগে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হার্বাট জানিয়েছিলেন, ম্যারিলিন কাজ করতো ছোট একটি ক্যাফেতে। আমি তাকে সেই ক্যাফেতে যাওয়া-আসা করতে দেখতাম। তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম অপলক দৃষ্টিতে। কিছুই বলার সাহস পেতাম না। একদিন আমি নিজের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে তাকে বলি কোনোদিন কী আপনার সময় হবে আমার সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার? ম্যারিলিন রাজি হলে তারা যান সিনেমা দেখতে। এর এক বছর পর প্রেমিকার কাছে হার্বাট জানতে চান তিনি তার স্ত্রী হতে আগ্রহী কী না।
এই দম্পতির রয়েছে ছয় সন্তান, ১৬ নাতি-নাতনি। তার নাতি-নাতনিদের ঘরে রয়েছে ২৫ সন্তান। আবার তাদের ঘরে রয়েছে তিনজন। অর্থাৎ, ডিলাগলি দম্পতি দেখে গেছেন পাঁচ প্রজন্মের উত্তরসূরি। তাদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হয় সোমবার (১৫ জুলাই)।
হার্বাট ও ম্যারিলিনের একই দিনে চলে যাওয়া সম্পর্কে নিউইয়র্কের লিনক্স হিল হাসপাতালের মনোবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড. ম্যাথিউ লরবার বলেন, যখন পরিবারের একজন সদস্যের মৃত্যুর পরপরই সেই পরিবারের অন্য কেউ মারা যান তখন বলা যায়, দ্বিতীয় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়ে থাকে তার ভগ্ন হৃদয়ের কারণে।
এই অনলাইন ডেটিংয়ের যুগে যখন প্রেম হয়ে যায় মানুষটিকে না দেখেই, আর বিচ্ছেদও ঘটে যায় দ্রুত, তখন ডিলাগলি দম্পতি সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য নজির। হৃদয়ছোঁয়া দীর্ঘ ভালোবাসার গল্প সৃষ্টি করে তারা হয়েছেন মহিমান্বিত। হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের প্রেমের কালজয়ী প্রতিমা।