৮০তে টম অ্যান্ড জেরি - দৈনিকশিক্ষা

৮০তে টম অ্যান্ড জেরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জেরি ইঁদুর, আর বিড়াল হলো টম। স্বাভাবিকভাবে বিড়ালের ত্রাসে সারাক্ষণ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে থাকার কথা ইঁদুরের। কিন্তু ঘটনা ঠিক উল্টো, এখানে ইঁদুর জেরির যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ বিড়াল টম। রাতদিন, বছরের পর বছর, সময় নেই, অসময় নেই টমকে তুমুল নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে জেরি। দশকের পর দশক সেসব দেখে হেসে লুটোপুটি খেয়ে যাচ্ছে শিশু-কিশোর থেকে সব বয়সের মানুষ। বাজি ধরে বলা যায়, এই ইঁদুর-বিড়ালের দুষ্টুমি দেখতে বসলে মন খারাপ উবে যাবে এক নিমিষে। আর সময় যে কোন ফাঁক দিয়ে চলে যাবে, বোঝাই যাবে না। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি টম ও জেরির ৮০তম জন্মদিন আজ।

টম অ্যান্ড জেরি | ছবি : সংগৃহীত

৮০ বছর ধরে পৃথিবীর মানুষকে নিষ্ঠার সঙ্গে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই কার্টুন চরিত্র। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে উইলিয়াম হানা ও জোসেফ বারবেরা প্রথম দর্শকের সামনে আনেন টম ও জেরিকে। 

১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তারা নির্মাণ করেছিলেন কার্টুনটির ১১৪টি পর্ব। আর তা এই ১৮ বছরে একাডেমি পুরস্কারে স্বল্পদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র বিভাগে সাতবার জিতে নিয়েছিল সেরার পুরস্কার।

‘টম অ্যান্ড জেরি’র প্রথম পর্ব পুসি গেটস দ্য বুট থিয়েটারে দেখানো হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। নির্মাতা হানা ও বারবেরা দুজনের বয়সই তখন ৩০-এর নিচে। শুরুতে টমের নাম ছিল জাসপার আর জেরির জিঙ্কস। প্রথম পর্বের শুরুতে টম জেরির লেজ নিয়ে খেলা করত, জেরিকে বল বানিয়ে ক্যাচ ক্যাচ খেলত। প্রথম পর্বটিই জিতে নেয় অস্কার এবং কোটি কোটি মানুষের হৃদয়। অসংখ্য মানুষ চিঠি লিখে জানায়, তারা টম ও জেরিকে আরও চায়।

বড় পর্দায় চার্লি চ্যাপলিনকে দেখে বারবেরা শিখেছিলেন, সংলাপ ছাড়াই কেবল চরিত্র দিয়েই তৈরি হতে পারে দুর্দান্ত কমেডি। সেটাই করেছিলেন তিনি। প্রতিটি পর্ব তৈরি করতে তখন খরচ পড়ত সাড়ে চার লাখ টাকা। তাই বছরে ছয় থেকে সাতটির বেশি পর্ব তৈরি করা সম্ভব হতো না। 

কার্টুন বিশেষজ্ঞ জেরি বেক বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, আপনি ছোটবেলায় যে টম অ্যান্ড জেরি দেখেছেন, আর এখন যেগুলো দেখেন, কোনটা কবে বানানো সেটা ঘুণাক্ষরেও টের পাবেন না। অ্যানিমেশনের মজাটাই এখানে। এটি চিরসবুজ। কখনো পুরোনো না হয়ে আবেদন ধরে রাখে। অনেকটা শিল্পীদের আঁকা ছবির মতো। সেটা যদি ১৭ বা ১৮ শতকেও আঁকা হয়, আজকের দিনেও সেটা নতুনের মতো কথা বলবে। টম অ্যান্ড জেরির ক্ষেত্রে সেটা আর একটু বেশি সত্য।’

অবশ্য ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের পর ১৯৬১-৬২ খ্রিষ্টাব্দে জিন ডাইচ যখন টম অ্যান্ড জেরি পরিচালনার দায়িত্ব নেন, তখন নিয়মিত বিরতিতে এই কার্টুনের ১৩টি পর্ব ‘সবচেয়ে বাজে কার্টুন’ তকমা পায়। মার্কিন-চেক এই পরিচালক নিজেও স্বীকার করেছেন, টম অ্যান্ড জেরির ব্র্যান্ডকে তিনি ডুবিয়েছেন। মূল নির্মাতাদের বানানো কার্টুনগুলো না দেখেই তিনি সেটা বানিয়েছিলেন। কারণ, সেগুলো তখনো প্রাগে পৌঁছায়নি। 

একই সময়ে প্রাগে নিজের স্টুডিওতে বসে চুপিচুপি তিনি পাপাই কার্টুন বানাচ্ছিলেন। তিনিই জানিয়েছেন, ‘বাজে টম অ্যান্ড জেরি’ বানানোর জন্য ভক্তদের কাছ থেকে মৃত্যুর পরোয়ানা পর্যন্ত পেয়েছেন তিনি। এরপর ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য নির্মাতা মিলে পুনরুজ্জীবিত করেছেন এই চরিত্র দুটিকে।

টম অ্যান্ড জেরি | ছবি : সংগৃহীত

কার্টুনে আটকে রাখা যায়নি টম ও জেরিকে। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে একই নামে শুরু হয় টেলিভিশন সিরিজ। ১৯৮০ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত চলেছে টম অ্যান্ড জেরি কমেডি শো। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলেছে আরেকটি সিরিজ, নাম টম অ্যান্ড জেরি কিডস। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলেছে টম অ্যান্ড জেরি টেলস। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এখন পর্যন্ত চলছে দ্য টম অ্যান্ড জেরি শো।

জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত টম অ্যান্ড জেরি: দ্য মুভি মুক্তি পায় ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে। তাদের নিয়ে আরও একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পাবে এ বছর।

এখনো, আশিতেও শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাইকে হাসানোর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে টম অ্যান্ড জেরি। উইলিয়াম হানা চলে গেছেন ২০০১ সালে, ৯০ বছর বয়সে। এর পাঁচ বছর পর ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ৯৫ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়েছেন এই কার্টুনের আরেক জনক জোসেফ বারবেরা। টম আর জেরি মিলে শৈশব রাঙিয়ে যাচ্ছে বহু মানুষের, সঙ্গী হয়েছে অবসর, একাকিত্ব এবং মন খারাপের।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034270286560059