প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের শিক্ষালাভে সহায়তা হিসেবে বর্তমান সরকার শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করেছে। শিক্ষাজীবন শেষে বিশেষ সুবিধায় সরকারি চাকরি পাবে তারা। বর্তমানে দেশের ৯০ হাজার প্রতিবন্ধী প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ৫০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তি পাচ্ছে। মানসিক প্রতিবন্ধী শিশু তুলির লেখাপড়া ও ভবিষ্যত নিয়ে মা সুফিয়া বেগমের হতাশা এখন আর নেই। এই মায়ের বিশ্বাস, একদিন রাষ্ট্র তার প্রতিবন্ধী শিশুর দায়িত্ব নিবে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘরছাড়া ছিন্নমূল মানুষকে সরকারি উদ্যোগে বাড়ি করে দেয়া হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়া ও পর্যায়ক্রমে সব রাস্তাঘাট পাকা হওয়ার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় গ্রামেই নাগরিক জীবনের সুবিধা পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে শহরে প্রাইভেট গাড়ি নেই, তো কি হয়েছে? স্মার্ট ফোনের একটি মেসেজে চলে আসবে ‘উবার’, বা ‘পাঠাও’র মতো বেসরকারি পরিবহন সেবা। দরদাম ছাড়াই সুনির্দিষ্ট ভাড়ায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে নগরবাসী। পরিবহন সেবায় এটি এক নতুন বিস্ময়। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে রফিকুল ইসলাম মিয়া পেনশনের টাকা পান মোবাইল ফোনে। এজি অফিসে গিয়ে এখন আর তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না।
বরগুনার সালমা বেগম পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের লাভের টাকা নির্দিষ্ট তারিখে পাচ্ছেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কষ্ট করে পোস্ট অফিস বা বাংলাদেশ ব্যাংকে যেতে হচ্ছে না তাকে। জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান মুক্তিযোদ্ধারা ঘরে বসে মোবাইল ফোনে ভাতা পাচ্ছেন। যিনি সহসা মার্কেট কিংবা বাজারে যেতে চান না, তার জন্য রয়েছে অনলাইন কেনাকাটার ব্যবস্থা। পোশাক-আশাক, খাবার দাবারের পাশাপাশি দেশে কোরবানির গরু পর্যন্ত এখন অনলাইনে বেচাবিক্রি হয়ে থাকে। ডিজিটাল বিপ্লব বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের বিস্ময় হয়ে উঠছে। শহরের চাকুরে থেকে গ্রামের কৃষক পর্যন্ত উন্নয়নের অংশীদার হয়ে উঠছেন।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সরকার টানা দশ বছরের দেশ পরিচালনার সুযোগ পাওয়ায় বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে বিস্ময়করভাবে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ায় সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষটিও রাষ্ট্রের সুবিধা ভোগ করতে পারছে। আশ্রয়হীনকে ঘর, বেকারকে কর্মসৃজন প্রকল্পে ঢুকিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া সর্বত্র। দেশের সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। পাকা হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। রফতানি ও রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে প্রতিবছর। স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ।