বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড এস এম ইমামুল হক বলেছেন, ৯৫ ভাগ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ধ্বংসে নেমেছে ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে ৫ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এ ধরণের পরিস্থিতির অবসান চায় বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তারা এক কল্পিত সন্ত্রাসের ভয়ে ভীত হয়ে এর প্রতিবাদ করে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসছে না।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মাঝেই রোববার (২১ এপ্রিল) ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আবেদন’ শীর্ষক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ দাবি করেন। এর আগেও দুইবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাবার আহ্বান করেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে অনঢ় রয়েছেন।
উপাচার্য বলেন, বিগত ১৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ ব্যানারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতেগোনা ও চিহ্নিত কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী মানববন্ধন করে, যেখানে তারা আমার পদত্যাগ দাবি করে। ইতিপূর্বে চিহ্নিত কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীও একই দাবি করে আসছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাতেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আমার এ নিয়োগ দিয়েছেন। যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৭ মে। বিগত ৩ বছর ১০ মাসের বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে অপেক্ষাকৃত নবীন এই বিদ্যাপীঠকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছি।
উপাচার্য বলেন, আমার মেয়াদের শেষ সময়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রায় এক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারগুলোতে তালা লাগিয়ে অবৈধভাবে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। অহেতুক এই আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এ ধরণের পরিস্থিতির অবসান চায় বলে আমার বিশ্বাস। তারা কল্পিত সন্ত্রাসের ভয়ে ভীত হয়ে এর প্রতিবাদ করে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসছে না।
প্রফেসর ড এস এম ইমামুল হক বলেন, প্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছে আমার আবেদন, পরবর্তী কর্মদিবসে তোমরা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে ক্লাসে চলে যাও। সকল বরিশালবাসীর কাছে আমার অনুরোধ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মহিমা নিয়ে এগিয়ে চলতে আপনাদের সাহসী প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে আসুন।
গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বৈকালীন চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। শিক্ষার্থীরা এই অনুষ্ঠানের প্রতিবাদ জানালে এ ঘটনায় উপাচার্য ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন। এর প্রতিবাদে এবং তার পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।