‘উচ্চশিক্ষিত’ বেকারদের ‘অপরাধ’ কী? - দৈনিকশিক্ষা

‘উচ্চশিক্ষিত’ বেকারদের ‘অপরাধ’ কী?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশে এখন ৪ কোটি ৩৪ লাখ মানুষের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ এ মুহূর্তে পড়াশোনা করছে না, কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে না এবং কোনো কাজকর্মও করছে না। অর্থাৎ এই বিপুলসংখ্যক তরুণ-যুবা জীবনযাপনের জন্য সমপূর্ণভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। বিশেষজ্ঞরা এই অংশটির নাম দিয়েছেন ‘নিষ্ক্রিয়’।

এই নিষ্ক্রিয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগা হলেন তাঁরা, যাঁরা ‘উচ্চশিক্ষিত’ কিন্তু বেকার। চাকরি না পাওয়ার ফলে নিজেদের পরিবারের গলগ্রহ ভাবতে ভাবতে তাঁদের মনে যে হতাশা ও গ্লানি জমে ওঠে, তা দুঃসহ। হতাশা তাঁদের মা-বাবাকেও ছাড়ে না। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষিত ছেলের বেকারত্ব মা-বাবার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। শনিবার (১৫ জুন) ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়, প্রতিবেদনটি লিখেছেন মো. আল ইমরান।

সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এমপ্ল­য়মেন্ট রিসার্চ (সিডার) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ‘কর্মসংস্থান ও শ্রমবাজার পর্যালোচনা ২০১৮’ শিরোনামে এক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে; যেখানে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে বেকারত্বের হার উচ্চশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। যাঁর ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা’ যত বেশি, তাঁর চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা তত কম।

যাঁরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আর যাঁরা অনার্স-মাস্টার্স পাস করেছেন, তাঁদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ। আরো একটা লক্ষণীয় তথ্য হলো, কম শিক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যে বেকারত্বের হার ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে; কিন্তু বেশি শিক্ষিত ব্যক্তিদের বেকারত্বের হার খুব দ্রুতগতিতে বাড়ছে।

দেশে এত বিশ্ববিদ্যালয়, এত অনার্স-মাস্টার ডিগ্রিধারী লোকের দরকার আছে কি না, তা কেউ ভেবে দেখে না। দরিদ্র মা-বাবার কষ্টার্জিত টাকা খরচ করে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে আট বছর ধরে দর্শনশাস্ত্র পড়ে একখানা মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করার পরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার জন্য লাখ টাকা ঘুষ দিতে প্রস্তুত, তবু চাকরি মিলছে না—আমার দেশের উচ্চশিক্ষিত যুবসমাজের জন্য এহেন করুণ দুর্দশায় আমরা কেন ও কী করে পৌঁছালাম, এর জন্য কারা দায়ী এবং এই দুর্দশা থেকে আমরা কিভাবে উদ্ধার পেতে পারি, তা নিয়ে গভীর গবেষণা হওয়া জরুরি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি পাস করেছেন, এমন এক তরুণ ঢাকার হাতিরঝিলের পাড়ে একটা প্লাস্টিকের টেবিল পেতে লোকজনের রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার মাত্রা মেপে কিছু পয়সা আয় করেন। মাস্টার্স পাস করতে তাঁর লেগেছে সাড়ে আট বছর। কিন্তু এখন কোনো চাকরি পাচ্ছেন না, পাবেন যে এমন আশাও দিন দিন কমে যাচ্ছে।

আমি যদি জিজ্ঞাসা করি, ‘কী? চাকরি হলো?’ বেচারি করুণ হেসে বলেন, ‘কই আর হলো? দেশে কি চাকরি আছে?’ নিজেই নিজেকে ভর্ত্সনা করছেন, এমন ভঙ্গিতে নিজেকে স্ত্রীর ভাই সম্বোধন করে বলেন, ‘... কোন আক্কেলে যে মাস্টার্স পড়তে গেছলাম! নাইলে তো বাড়িতে ফিরত গিয়া চাষবাস করতে পারতাম!’

ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034420490264893