যেদিন কাকী বাড়ি থাকতো না, সেদিন মাহমুদুল হুজুর গা-হাত-পা টিপে দেয়ার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যেতেন। রাতে হুজুর মোবাইল দেখার এক পর্যায়ে খারাপ কাজ করতেন। পরে আরো একদিন করতে গেছেন কিন্তু করতে দেইনি। কারো সঙ্গে এ কথা বললে খারাপ হবে বলে ভয় দেখাতেন হুজুর। কথাগুলো বলছিল যশোরের মণিরামপুর উপজেলার হাঁসাডাঙ্গা গ্রামের হাফিজিয়া মাদরাসার এক ছাত্র।
শুধু ওই ছাত্র নয়, মাদরাসার আরো অনেক ছাত্র ওই শিক্ষক কর্তৃক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরজমিন মাদরাসার শিক্ষক মাহমুদুল হাসানের যৌন নির্যাতনের শিকার আরো কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। এ সময় একই গ্রামের আরেক ছাত্র জানায়, একদিন মাদরাসার কেউ না থাকার সুযোগে হুজুর তাকে দিয়ে গা টেপায়।
এক পর্যায় হুজুর তার গোপনাঙ্গে হাত দিতে বাধ্য করেন। পরে আরো একদিন করতে বললে হুজুরের ওপর রাগ করে চলে আসি। এ সময় যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্র প্রথমে ভয়ে কিছু বলতে চাচ্ছিল না। পরে সে মুখ খোলে। সে জানায়, কয়েক মাস আগে হুজুরের বোনের বিয়েতে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। হুজুরের স্ত্রী আলাদা ঘরে ঘুমান। আর তাকে নিয়ে হুজুর আরেক ঘরে ঘুমায়। রাতে মোবাইল দেখতে দেখতে হুজুর তার সঙ্গেও খারাপ কাজ করে।
আরেক ছাত্র একই অভিযোগ করে। সম্প্রতি মাদরাসার কয়েকজন ছাত্র মুখ খুললে এলাকায় তোড়পাড় সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মাদরাসা কমিটি সালিশি সভা করে পুরো ঘটনাকে মিথ্যা বলে এড়িয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে যৌন নির্যাতনের শিকার কোনো ছাত্রের অভিভাবককে সেখানে ডাকা হয়নি। অবশ্য ঘটনাটি নিয়ে গ্রামবাসী বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
একপক্ষ হুজুরের পক্ষাবলম্বন করে পুরো ঘটনা মিথ্যা বলে দাবি করছে। এছাড়া কমিটির লোকজনসহ ওই পক্ষটি যৌন নির্যাতনের শিকার ছাত্র ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঘটনা না বলতে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্যাতনের শিকার এক ছাত্রের পিতা ক্ষুব্ধ হয়ে জানান, তাদের কাউকে না জানিয়ে সালিশি সভার নামে আয়েশি সভা করা হয়েছে। মাদরাসা কমিটির সেক্রেটারি আশরাফ হোসেন বলেন, তারা সালিশ করে কোনো সত্যতা পাননি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে অভিভাবকদের নিয়ে সভা করা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন। আর মাদরাসা শিক্ষক মাহমুদুল হাসান নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।