কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেছেন, ‘মানুষের সার্থকতা তার মেধায়, মননে। সেরা হতে তাই সম্পদের প্রাচুর্য নয়, প্রয়োজন মেধার বিকাশ। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার মূল কারিগর মানুষের মেধা।’
শুক্রবার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে (ইডিইউ) ২ দিনব্যাপী ‘ইন্টার ইউনিভার্সিটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডে ২০২০’ এর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন তিনি। সারাদেশের ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক দলের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে আগামীর প্রকৌশলীদের এ উৎসব।
ড. কায়কোবাদ আরও বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত দেশ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তুলনায় আমরা কোনো দিকেই কম মেধাবী নই। বিশ্বমঞ্চে আমরাও বিজয়ের নিশান উড়িয়েছি। তাই বাংলাদেশি হিসেবে হীনম্মন্যতায় ভোগার কিছু নেই। নাগরিক উন্নত হলে দেশও উন্নত হয়।’ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী নাগরিক হয়ে ওঠার আহ্বান জানান এ জ্ঞানতাপস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান বলেন, ‘বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পুরনো কাজ-পেশা হয়তো অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। তাদেরকে কীভাবে পুনর্বাসন করা যায়, তাও আমাদের ভাবতে হবে। তাই বিজ্ঞানের পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞানও সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, ‘ভবিষ্যৎ শিল্প বিপ্লবে যাতে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিতে পারে, তার জন্য আমরা শুরু করছি ইডিইউ ফিউচার ফ্যাক্টরি। রোবট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, স্মার্ট মেশিন, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লক চেইন ডেটা- এ ধরনের এডভান্স প্রযুক্তিতে সেরা হয়ে ওঠার জন্য চর্চা ও অনুশীলনের প্লাটফর্ম দিচ্ছে ইডিইউ।’
স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সামস উদ-দোহা, রেজিস্ট্রার সজল কান্তি বড়ুয়া, স্কুল অব লিবারেল আর্টসের অ্যাসোসিয়েট ডিন মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, স্কুল অব বিজনেসের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. মুহাম্মদ রকিবুল কবিরসহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
২ দিনব্যাপী আয়োজনে ৭টি প্রতিযোগিতায় প্রকৌশলীদের মেধার পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হয় হ্যাকাথন ও ইঞ্জিনিয়ারিং অলিম্পিয়াড। আগামীকাল দ্বিতীয় দিন প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, প্রজেক্ট শো-কেইস, পোস্টার প্রেজেন্টেশন, আইডিয়া কনটেস্ট এবং রোবো সকার কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মরত বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে টেক টক। এতে প্রথম দিন ‘বিগ ডাটা, ডাটা এনালিটিক অ্যান্ড আইওটি’ বিষয়ে আলোচনা করেন চুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আরেফিন ও গ্রামীণফোনের প্রোডাক্ট ম্যানেজার মুহাম্মদ জাকারিয়া হায়দার।
দ্বিতীয় দিন ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভলিউশন এন্ড বিজনেস ইন্টেলিজেন্স’ বিষয়ে টেক টকে অংশ নেবেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের জেনারেল সেক্রেটারি মুনির হাসান, স্যামসাং বাংলাদেশের চিফ টেকনোলজি অফিসার জুবেরুল ইসলাম, গ্রামীণফোনের চট্টগ্রাম হেড অব সার্কেল মার্কেটিং রেজওয়ান চৌধুরী এবং অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্ট্রোলস লি. এর পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তাওহিদুল ইসলাম।