‘প্রাথমিক’ বনাম ‘মৌলিক’ শিক্ষা - Dainikshiksha

‘প্রাথমিক’ বনাম ‘মৌলিক’ শিক্ষা

ড. আবদুস সাত্তার মোল্লা |

আধুনিক বিশ্বের সব দেশেই ১৬ থেকে ১৮ বছরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মেয়াদ প্রায় সমান দীর্ঘ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ- এ তিনটি স্তরে বিন্যস্ত। খুব অল্পসংখ্যক দেশে ৬ বছরের বেশি মেয়াদের প্রাথমিক শিক্ষা চালু আছে।

বিশ্বের ১৮২টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশিসংখ্যক (৮৭) দেশে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ ৬ বছর। এ কাতারে রয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শিক্ষাদীক্ষায় সবচেয়ে উন্নত দেশগুলো।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষার পরই বিদ্যালয় ব্যবস্থা থেকে ঝরে পড়ে না। এসব দেশ ইউনেস্কোর অন্তত ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত আবশ্যিক শিক্ষার নীতি জানে এবং ইউনেস্কোর এই চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রধানত ৬ শ্রেণীর প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সপ্তম থেকে নবম-দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাকে মাধ্যমিক স্তরে রেখেই মৌলিক শিক্ষা (Basic Education) হিসেবে বাস্তবায়ন করে।

এরূপ ব্যবস্থার সুবিধা হল : ১. শিক্ষার প্রধান তিনটি স্তর প্রায় সমান সমান দৈর্ঘ্যরে হয় (৫/৬+৬/৭+৫/৬ বছরের); ২. এতে উচ্চশিক্ষা-পূর্ব দু’রকম (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনাও সুন্দরভাবে করা যায়; ৩. প্রাথমিক স্তর এবং নিুমাধ্যমিক উপস্তর মিলে মৌলিক শিক্ষা ভালোভাবেই অর্জিত হয়।

বর্তমান বাংলাদেশে পাকিস্তান আমলে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ছিল ৪ বছর। মেয়াদ ১ বছর বাড়ানোর ফলে ১৯৫৫ সাল থেকে ৫ বছর মেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষা চলতে থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-ই-খুদার নেতৃত্বে গঠিত প্রথম শিক্ষা কমিশন (১৯৭২) প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ বাড়িয়ে আট বছর করার সুপারিশ (১৯৭৪) করে।

এ দেশের পরবর্তী প্রায় সব শিক্ষা কমিশনই প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ আট বছরে উন্নীত করার সুপারিশ বহাল রাখে। ২০০৯ সালে গঠিত দেশের সর্বশেষ শিক্ষা কমিশনের নাম দেয়া হয়েছে শিক্ষানীতি প্রণয়ন ‘কমিটি’। এ কমিটিও প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ আট বছরে উন্নীত করার সুপারিশ পুনর্ব্যক্ত করে।

ওই কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সুপারিশমালা ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’ নামে গৃহীত হয়। কিন্তু ৭-৮ বছর পরও প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ ৮ বছরে উন্নীত করার প্রক্রিয়া স্থবির রয়েছে।

শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির (২০০৯-১০) একজন সদস্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরে এমএড কোর্র্সে আমার শিক্ষাক্রমের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান। শিক্ষাবিজ্ঞানে একজন পোস্ট ডক্টরাল স্কলার হিসেবে ড. ছিদ্দিকুর রহমান অল্পদিনের মধ্যেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি শ্রেণী যোগ করার সমস্যাগুলো বুঝতে পেরেছিলেন।

সেগুলো উল্লেখ করে তিনি পত্রিকায় ‘প্রাথমিক শিক্ষা : মেয়াদ বৃদ্ধির সহজ উপায়’ শীর্ষক নিবন্ধ (০৫.০৭.২০০৯) লিখেছিলেন। তিনি ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রেখেই তাকে ‘উচ্চ প্রাথমিক’ নাম দেয়ার প্রস্তাব করেন। আমি তখন সিঙ্গাপুর National Institute of Education-এ শিক্ষা বিজ্ঞানে পিএইচডি গবেষণারত।

স্যারকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম- ‘নিুমাধ্যমিক’ নামের পরিবর্তে ‘উচ্চ প্রাথমিক’ নাম বসালে শিক্ষার কোনো প্রকৃত উন্নতি হবে কিনা। কোনো ভালো উত্তর মেলেনি। তবে বুঝতে পেরেছি, প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বৃদ্ধির বহুদিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পক্ষে যুক্তি বানানোর চেষ্টা চলছিল।

কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন কর্তৃক ৮ বছর মেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষার সুপারিশ করার পেছনে যুক্তি ছিল সর্বজনীন আবশ্যিক শিক্ষার মেয়াদ বাড়ানো, দায়িত্বশীল নাগরিক ও উন্নত ব্যক্তি গঠন এবং অর্থকরী বিদ্যার প্রাথমিক বিষয়গুলো শিক্ষা দেয়া (বাংলাদেশ শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট ১৯৭৪, পৃষ্ঠা ২৩)।

তখন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বেশ দূরে দূরে অবস্থিত ছিল বলে নিজ গ্রামে/আশপাশে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার ব্যবস্থা থাকলে পঞ্চম শ্রেণীর পরই ঝরে পড়ার হার হ্রাস পাওয়ার আশাও ছিল। ওই সময় এখনকার মতো ইন্টারনেট চালু হয়নি; এ দেশে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সংখ্যাও ছিল অল্প কয়েকটি।

তাই অন্যান্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে জানাও বেশ কঠিন ছিল। ৮-৯ বছরের সর্বজনীন আবশ্যিক শিক্ষাকে যে ‘প্রাথমিক’ না বলে ‘মৌলিক শিক্ষা’ বলা হয় তাও তখন জানা ছিল না।

প্রাথমিক শিক্ষাস্তরকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করতে না পারায় হতাশার কিছু নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি শ্রেণী যোগ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এসব বিদ্যালয়ের অবকাঠামো তৈরি এবং পর্যাপ্ত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করতে এখন অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে।

সরকার এ বিপুল অর্থ সংস্থান ও বিনিয়োগ করতে উৎসাহ পেত যদি এ ব্যবস্থা শিক্ষার সার্বিক মানের সত্যিকার উন্নয়ন ঘটাবে বলে নিশ্চিত হওয়া যেত। বাস্তবে তা ঘটার নয়।

এই বিপুল অর্থ খরচ করার সরকারি সামর্থ্য তৈরি হলেও একটি বিরাট বাস্তব সমস্যা তৈরি হবে। বর্তমানে যেসব শিক্ষক মাধ্যমিক-জুনিয়র বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পাঠদান করেন, তাদের পরিচয় হাইস্কুলের শিক্ষক।

তাদের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করে, তবে এ শিক্ষকদেরও তো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পাঠদান করার কথা! কিন্তু হাইস্কুলের শিক্ষকদের আমরা কি হঠাৎ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের মর্যাদায় নামিয়ে দিতে পারি? এটি করতে গেলে তারা অপমান বোধ করতে পারেন।

বস্তুত প্রাথমিক শিক্ষাস্তর অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করা হলে শিক্ষার স্তরবিন্যাসে বৈষম্য তৈরি হয়, স্তরভিত্তিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ার ঝুঁকি থাকে, বিশ্বায়নের যুগে বিশ্বব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য করা হয়, অহেতুক বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। অথচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান অবকাঠামো অব্যবহৃত থাকার সম্ভাবনা তৈরি হয়, নিুমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা এবং একই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পড়তে বলে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়।

পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা অপ্রতুল হওয়ায় এ শিক্ষাস্তর বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে মেলানোর জন্য ষষ্ঠ শ্রেণীতে উন্নীত করার চেষ্টা করা যায়। ৬ শ্রেণীর প্রাথমিক শিক্ষা শেষে চীনের মতো একধরনের বৃত্তিমূলক-কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করতে সুবিধা হবে।

কর্মে নিয়োগের জন্য বৃত্তিমূলক-কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি এ জন্য যে, সাধারণ (এবং মাদ্রাসা) শিক্ষা ধারার অষ্টম শ্রেণীতেও ‘অর্থকরী বিদ্যার প্রাথমিক বিষয়গুলো শিক্ষা দেয়া’ বস্তুত অসম্ভব। এক বছরের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণীর সংখ্যা হবে ৭, মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর বর্তমানের ৭ বছর থেকে কমে হবে ৬ বছর, আর সাধারণ শিক্ষাধারায় উচ্চশিক্ষার বর্তমান মেয়াদ ৫ বছর বহাল রাখলে ব্যবস্থাটি ৭+৬+৫ আকারে সুন্দর একটি পিরামিডের আকৃতি ধারণ করবে।

উল্লেখ্য, মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের সর্বোচ্চ উপস্তর ‘উচ্চমাধ্যমিক’কে অনেকে এখনও ‘ইন্টারমিডিয়েট’ নামে ডাকে (ব্রিটিশ আমলে প্রবর্তিত এই নাম ও স্তর ১৯৬২ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল, ১৯৬৩ সাল থেকে এটি ‘উচ্চমাধ্যমিক’ হয়ে যায়) এবং ভুলবশত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার মধ্যবর্তী একটি শিক্ষাস্তর বলে উল্লেখ করে।

মাধ্যমিকের এ উপস্তরের শিক্ষা দেশের অনেক অনার্স-মাস্টার্স কলেজ থেকে বাদ দিয়ে আবার যোগ করা হয়েছে মূলত ব্যবসায়িক কারণে; ভালো শিক্ষাদানের জন্য নয়। অনার্র্স-মাস্টার্স কলেজগুলোয় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অবহেলিত হতে বাধ্য; আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ উপস্তরের শিক্ষা পেতে পারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ঢাকার সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। আর দেশের ক্যাডেট কলেজগুলো সবই মূলত সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে শিক্ষাদানকারী ‘মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়’।

এখন বেশি প্রয়োজন অন্তত অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাকে মৌলিক বলে ঘোষণা করা। এ ঘোষণাকে অর্থবহ করার জন্য দরকার বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক, এই স্তর পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করা এবং সনদভিত্তিক পাবলিক পরীক্ষা। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের নবম-দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক বহুদিন ধরেই বিনা মূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে; উচ্চমাধ্যমিক উপস্তরের বোর্ড-প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকগুলোও বিনা মূল্যে বিতরণের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।

এখন দরকার প্রাথমিক স্তরের মতো অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মৌলিক শিক্ষাকে অবৈতনিক করে দেয়া; সঙ্গে যদি একে ‘বাধ্যতামূলক’ও ঘোষণা করা হয় এবং বর্তমান জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার পরিবর্তে মৌলিক শিক্ষা সার্টিফিকেট (Basic Education Certificate, BEC) পরীক্ষাকে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উভয়ের জন্য অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মৌলিক শিক্ষা সমাপনে বেশ চাপ সৃষ্টি হবে। এরূপ মৌলিক শিক্ষার পর যারা সাধারণ শিক্ষায় আর অগ্রসর হতে পারবে না, তাদের মধ্যম মানের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে কর্মে নিয়োগ করা যাবে।

লেখক: শিক্ষা গবেষক এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সদস্য

 

সূত্র: যুগান্তর

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003626823425293