কিরগিজস্তান থেকে কলকাতায় ফিরে হোটেল কোয়ারেন্টিনে যেতে রাজি হলেন না সেদেশে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া ভারতীয় তরুণরা। উল্টে তারা বললেন, মেডিক্যাল ছাত্র হওয়ায় তারা জানেন কী করতে হয়, কিভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভের মুখে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
কিরগিজস্তানে আটকে পড়া ১৫১ জন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন। তারপরে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে যাওয়া নিয়ে বচসা শুরু হয় কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বচসা।
কলকাতায় ফেরা মেডিক্যাল ছাত্র শেখ মিলন বলেন, 'আমাদের প্রথমে বলা হয়েছিল হোটেল কোয়ারেন্টিনে থাকতে কিন্তু আমরা অত খরচ করে কেন থাকতে যাব? আমাদের মোবাইলে যে মেসেজ এসেছে তাতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে কিন্তু এখানের লোকজন আমাদের জোর করে হোটেলে যেতে বলছিল।'
জুদান নামে আর এক ছাত্র বলেন, 'কয়েক ঘণ্টা ধরে আমাদের আটকে রেখেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আমরা বলছি হোম কোয়ারেন্টিনে যাব। ওরা বলছে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে যেতে। ওরা তো হোটেলের থেকে পয়সা খেয়েছে। আমরা মেডিক্যাল ছাত্র, আমরা তো জানি কিভাবে থাকতে হয়, নাকি!'
বিহারের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমাদের এখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হচ্ছে। আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে অনুরোধ করছি যাতে আমাদের বাসে করে বিহারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পরে আমি ট্রেনে হোক বিমানে-যেভাবেই বাড়িতে যাই না কেন সেখানেও আমাদের আবার সাত দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হবে। আমরা একশো জনের উপরে বিহারের ছাত্র রয়েছি। ওখানে গিয়ে আমরা কোয়ারেন্টিনে থাকব। আমরা নিজেরাই কোয়ারেন্টিনে থাকতে চাইছি তবে নিজের রাজ্যে গিয়ে।'
বিমানবন্দরে বচসার সময়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা করা হয়, 'পুলিশকে তার কাজ করতে দিন। আপনারা সকলেই শিক্ষিত। কেউ আইন ভাঙবেন না। আমরা তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকব। পুলিশ নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছে। আপনারা সহযোগিতা করুন।'
তবে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে নতি স্বীকার করে নেয় পুলিশ। বিমানে ফেরা কোনো ছাত্রকেই তারা আটকাতে পারেননি। রাত একটা নাগাদ তারা নিজেদের মতো বেরিয়ে যান বিমানবন্দর থেকে।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তজার্তিক বিমানবন্দর থানা সূত্রে খবর, যে সব ছাত্র ফিরেছেন তারা হোম কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন থাকবেন এই মুচলেকা নিয়ে তাদের ছাড়া হয়। ওই সব ছাত্রদের বোর্ডিংয়ের ঠিকানায় যে থানা এলাকার কথা উল্লেখ করা আছে সেই সব থানাকেও এ ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।