বাংলাদেশে সৃজনশীল ও মননশীল, বিচিত্র ও বহুমুখী পুস্তক প্রকাশে অ্যাডর্ন পাবলিকেশন দীর্ঘ দুই যুগ অতিক্রম করেছে। প্রকাশনা জগেক আমরা সৃজনশীলতা চর্চা ও জ্ঞান বিতরণের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বলে মনে করি। কাঠামোগত ও প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে নির্ধারিত পাঠ্যসূচি অনুসরণ করে চলে, আমরা সেখানে পাঠকের জন্য উন্মুক্ত পাঠ্যসূচি চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করে চলেছি। আমাদের প্রকাশনার মূল বিবেচ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সৃজনশীলতা, দার্শনিকতা, ঐতিহ্য, সংগ্রাম, ইতিহাসবোধ, মাটি ও মানুষের বিশ্বাস, জীবনবোধ, বিশ্বমানবতার প্রতি সংবেদনশীলতাকে দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া। এ লক্ষ্যে আমরা যেমন বাংলাদেশের চিরায়ত সাহিত্যকে পাঠকের সামনে হাজির করি তেমনি তাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দিতে সযত্ন প্রয়াস গ্রহণ করি। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
নিবন্ধে আরও জানা যায়, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের নির্বাচন ও সম্পাদনায় অ্যাডর্ন প্রকাশিত সাহিত্যকীর্তি গ্রন্থমালা প্রথম ও দ্বিতীয় সম্ভার দুই বাংলায় সমানভাবে সমাদৃত হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে এই চিরায়ত বাংলা সাহিত্যের ইংরেজি অনুবাদ বিশ্বের পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমরা একদিকে বিশ্বসাহিত্যকে বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত করি, তেমনি বিশ্বদরবারে বাংলা সাহিত্যকে পরিচিত করে তোলারও পদক্ষেপ নিই। অ্যাডর্ন প্রকাশ করেছে বাংলা ভাষা স্মারক ‘মহান একুশে সুবর্ণ জয়ন্তী গ্রন্থ’। বইটি দেশে ও বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অভিধান থেকে শুরু করে ভাষা ও প্রবন্ধ সাহিত্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য, মহান একুশ ও মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, আইন, অর্থনীতি, রাজনীতি, ধর্ম, দর্শন, কবিতা, নাটক, গল্প, উপন্যাস, ছড়া, অনুবাদ গ্রন্থ মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ শতাধিক বই প্রকাশ করেছে অ্যাডর্ন। আমরা ভাষা, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অর্ধশতাধিক বই প্রকাশের পাশাপাশি এ বছর মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেশ কিছু গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। এ জন্য শুধু প্রতিষ্ঠিত লেখকদের নয়, বরং নবীন, প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময় লেখকদেরও আমরা সযত্নে সম্মানজনক স্থান দিয়েছি।
একজন লেখকের পাণ্ডুলিপিকে একটা প্রকৃত গ্রন্থ করে তোলার ব্যাপারে অ্যাডর্ন সব সময় নিরলস পরিশ্রম করে আসছে। শুধু সাধারণ পাঠকদের জন্য নয়, অ্যাডর্ন পরিকল্পিতভাবে বয়স অনুপাতে পাঠকের জন্য, বিশেষত শিশু মনস্তত্বের দিকে লক্ষ রেখে বই প্রকাশ করে আসছে। দুই বছর থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এবিসি সিরিজ নামে বিশেষায়িত গ্রন্থ রয়েছে অ্যাডর্নের। যা শিশু ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। এভাবে বলতে গেলে, অ্যাডর্নের আলাদা লেখক ও পাঠকশ্রেণি গড়ে উঠেছে। বোদ্ধা মহলে অ্যাডর্ন পরিচিতি লাভ করেছে মানুষের অন্তঃশক্তির শ্রীবৃদ্ধির কারিগর হিসেবে। পাঠকের মননকে শাণিত করার জন্য অ্যাডর্ন মানসম্পন্ন, নিখুঁত ও নির্ভুল বই প্রকাশে সচেষ্ট।
এ বছর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে অ্যাডর্ন ৫০টির মতো বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু বইমেলা উপলক্ষে নয়, বছর জুড়েই অ্যাডর্ন বই প্রকাশে সচেষ্ট থাকে। মেধাভিত্তিক সমাজ গঠনে বই গুরুত্বপূর্ণ। সৃজনশীল ও মননশীল বইয়ের পাঠক যত বাড়বে, তত সমৃদ্ধ হবে দেশ ও জাতি।
সৈয়দ জাকির হোসাইন : প্রকাশক, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন।