ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও করোনাকালে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন তিনি।
এসময় দীর্ঘ ২৮ বছরে শিক্ষার্থীদের দেয়া প্রায় ৯ কোটি টাকার ন্যায্য পাওনা থেকে ডাকসুকে বঞ্চিত করা হয়েছে দাবি করে ডাকসুর ফান্ড ছাড়ে প্রশাসন গড়িমসি করলে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গোলাম রাব্বানী বলেন, গত ১৪ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে আমার নির্ধারিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে, দুটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে বহুল প্রত্যাশিত ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতামত/পরামর্শ/পর্যবেক্ষণ গ্রহণের দাবি জানাই। যার প্রেক্ষিতে গতকাল সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষে দীর্ঘ চার ঘণ্টার মিটিং হয়।
তিনি জানান, ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়নে গঠিত এক্সপার্ট কমিটির সভায় উপাচার্যে র উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে ডাকসুর ভিপি, জিএস ও এজিএস শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, মতামত, পরামর্শ ও পর্যবেক্ষণ সবিস্তার তুলে ধরেছেন। সেই আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান অবকাঠামো বিবেচনা করে সম্ভাব্য সেরা প্ল্যান প্রস্তুত করতে প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান, ‘মেসার্স ডাটা এক্সপার্ট (প্রাইভেট) লি.’ এর সাথে একযোগে কাজ করবে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে দ্বিতীয় দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের ডাকসুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্ধারণ করে দেওয়া বার্ষিক বাজেটের অব্যবহৃত অংশ (এক কোটি ৮৯ লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে প্রায় ৯০ লাখ টাকা) যেন আমরা ডাকসুর অনন্য উদ্যোগ, ‘শিক্ষার্থী সহায়তা ফান্ড’-এর মাধ্যমে এই দুর্যোগকালে অসহায় ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদানে ব্যবহার করতে পারি। এমনকি আমার ব্যক্তিগত খরচ (জিএস হিসেবে), কন্টিনজেন্সির জন্য বরাদ্দ পাঁচ লাখ টাকার অব্যবহৃত তিন লাখ টাকাও এই ফান্ডে হস্তান্তরে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ডাকসুর এই ফান্ড আমি এবং এজিএস সাদ্দাম হোসেন আমাদের ব্যক্তিগত দুই লাখ টাকা দিয়ে শুরু করি। পরবর্তী সময়ে অনেকেই সাহায্যের বাড়িয়ে দিলে এযাবৎ আমরা ৭০০ শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছি। আমাদের কাছে আরো এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর মানবিক আবেদন রয়েছে এবং ডাকসু পরিবার কাউকেই নিরাশ করতে চায় না, তাই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে আমাদের বাজেটের টাকা আমরা এই ফান্ডে দিতে আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মানবিক ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে দ্রুত অর্থ ছাড়ের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডাকসু জিএস বলেন, চরম অপ্রতুল বাজেট এবং অর্থ উত্তোলন নিয়ে প্রশাসনের গড়িমসি ও অসহযোগিতামূলক মনোভাব আমাদের স্বাভাবিক কাজের গতিকে বারংবার ব্যহত করেছে। গত ২৮ বছর যাবৎ ছাত্র সংসদের জন্য শিক্ষার্থীদের দেয়া প্রায় ৯ কোটি টাকার ন্যায্য পাওনা থেকে ডাকসুকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মানবিক প্রয়োজনে ডাকসুর অব্যবহৃত ফান্ড ছাড়ে প্রশাসন গড়িমসি করলে সেটা কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর ইতিবাচক সমর্থন ও সহযোগিতা একান্ত কাম্য বলেও উল্লেখ করেন গোলাম রাব্বানী।