‘স্কুলে যা পড়তাম তাই, কোচিংয়ের কথা কল্পনাও করেনি’ - দৈনিকশিক্ষা

‘স্কুলে যা পড়তাম তাই, কোচিংয়ের কথা কল্পনাও করেনি’

খুলনা প্রতিনিধি |

অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে শত কষ্টের মধ্যেও খুলনায় রিকশা চালক দু ভাই নাইমুর রহমান ও ফাহিমুর রহমান মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। রবিবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগে যথাক্রমে তারা জিপিএ-৪ ও জিপিএ-৩ পেয়েছে।

খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর এলাকার কারিকরপাড়ার গৃহপরিচারিকা মুন্নী বেগমের সন্তান নাইমুর রহমান ও ফাহিমুর রহমান। কিছুদিন আগেও রিকশা চালাতেন। জীবিকার তাগিদে এখন তারা ইজিবাইকের হ্যান্ডেল ধরেছেন। বড় ভাই নাইমুর রহমান নগরীর আফিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে আর ছোট ভাই ফাহিমুর রহমান দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। বাণিজ্য বিভাগ থেকে যথাক্রমে তারা জিপিএ-৪ ও জিপিএ-৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

নাইমুর রহমান জানান, বাবা (নাম বলতে চায়নি) অনেক দেনা করে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। এরপর আর কোনো খোঁজখবর রাখেননি আমাদের। মাঝেমধ্যে মোবাইল ফোনে কথা হলেও বাড়িতে আসেন না। বাবা চলে যাবার পর মা গৃহপরিচারিকার কাজ করলেও তা দিয়ে পাঁচজনের সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে মাকে সাহায্য করা এবং তিন ভাই-বোনের লেখাপড়া চালিয়ে নেয়ার জন্য দুই ভাইকেই রিকশা চালানোর পথ বেছে নিতে হয়।

তিনি আরও জানান, রিকশা চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে আর লেখাপড়া করা সম্ভব হতো না। স্কুলে যা পড়তাম তাই ছিল মূল পড়া। কোচিং করার কথা কল্পনাও করতে পারিনি। তবে একজন হৃদয়বান ব্যক্তি এগিয়ে আসেন আমাদের সহায়তার জন্য। তিনি বিনামূল্যে আমাদের পড়িয়েছেন।

নাইমুর জানান, এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় আমাদের দুই ভাইকে পড়তে হয় চরম সমস্যায়। টাকার অভাবে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিন্তু এক বড় ভাই আমাদের ফরম পূরণের টাকা দিয়ে সাহায্য করেন।

ফাহিমুর রহমান জানান, শত কষ্ট হলেও রিকশা চালিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে গেছি আমরা দুই ভাই। মা আমাদের সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। যা আয় হয়েছে তা দিয়ে লেখাপড়ার খরচ চালানোর সঙ্গে সঙ্গে চালিয়েছি পাঁচজনের সংসার। তবে খুব বেশি ভালো ফল আমরা করতে পারিনি। তবুও আমরা সন্তুষ্ট। আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই।

নাইমুর ও ফাহিমুরের মা মুন্নী বেগম বলেন, অনেক কষ্টে আমার দুই ছেলে ম্যাট্টিক (এসএসসি) পাস করিছে। আমি চাই তারা যেন এমএ পাস করতি পারে।

নাইমুর ও ফাহিমুরকে ফ্রি পড়াতেন খুলনার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাফরি বিশ্বাস। তিনি জানান, একদিন নাইমুরের রিকশায় চড়ে পাবলা থেকে খালিশপুর যাচ্ছিলাম। যেতে যেতে তাদের কথা শুনে চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি। সঙ্গে সঙ্গে পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছিলাম। সেই থেকে পরীক্ষা পর্যন্ত আমি ফ্রি পড়িয়েছি। আর ফরম পূরণের সময় সহায়তা করেছি। তাদের এই সাফল্যে তিনিও গর্বিত বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069050788879395