করোনা মহামারির অজুহাতে এবার অটোপাস চেয়েছেন ৩৪ হাজার শিক্ষক। প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্সের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষায় অটোপাস চেয়েছেন তারা। যদিও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা অটোপাসের দাবি জানালে তা নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা নানা কথা বলছেন। অটোপাস পাওয়া ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়েও নানা কথা বলছেন অনেকে। এরই মধ্যে এবার শিক্ষকরাই অটোপাস চাইলেন। করোনার অজুহাতে জ্ঞানগুরুদের অটোপাসের আবদান নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করেছেন।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিপিএড কোর্সের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)। সে পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে। নোটিশে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষা পেছানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। একইসাথে উকিল নোটিশে অটোপাসের দাবির কথাও উল্লেখ করেছেন আইনজীবী।
নোটিশে, ডিপিএড ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৩৪ হাজার পরীক্ষার্থীর শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া কাঠামোগত মূল্যায়ণের মাধ্যমে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষার সূচি মূলতবি করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়াও নোটিশটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক, শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালকসহ (নেপ) সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।
অটোপাস চাওয়া শিক্ষকরা জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিইএড) কোর্সের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
যদিও শিক্ষকদের অটোপাস চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাদের মতে জ্ঞানগুরুরাই যদি করোনার উছিলায় অটোপাস চাইতে পারেন তবে শুধু শিক্ষার্থীদের দোষ কেন হবে। শিক্ষকদের অটোপাসের দাবির বিষয়টি জানতে পেরে অনেকে হাসাহাসি করেছেন।
যদিও পরীক্ষা পেছানো বা অটোপাস দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক মো. শাহ আলম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরীক্ষা পেছানো হচ্ছে না। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। বিভিন্ন এলাকায় শুধুমাত্র ২৮ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনের ছুটি থাকায় ওইদিনের পরীক্ষার পেছানো হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির মধ্যে পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। দেশের সব ইনস্টিটিউট চলছে। শিক্ষকরা বললেই হবে নাকি?”
আর উকিল নোটিশ ও আটোপাসের লোভ দেখিয়ে কয়েকজন শিক্ষক নেতা নিরীহ সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।