চবির একাধিক বিভাগে শিক্ষক সংকট - Dainikshiksha

চবির একাধিক বিভাগে শিক্ষক সংকট

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ চালু হয়েছে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে। প্রতিষ্ঠার প্রায় চার বছরেও বিভাগে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই ধার করা শিক্ষক নিয়েই বছরের পর বছর চলছে শ্রেণি কার্যক্রম।

শুধু এই বিভাগ নয়, শিক্ষক ছাড়াই চলছে বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ। বিভাগটি চালু হয় ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে। শিক্ষক ছাড়াও এখানে কোনো গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাব নেই। নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিনেটের তিন সদস্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ধার করা শিক্ষক নিয়ে বিভাগ চলতে পারে না। উদ্যোগ নিয়েও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। আর শিক্ষকসংকট নিয়ে বিভাগ চললে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই সংকট কাটিয়ে উঠতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়ার দাবি করেন তাঁরা। তবে শিক্ষকসংকটের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য শিরীণ আখতারের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নিয়ে চালু হয় বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ। দুই বর্ষ মিলিয়ে এতে শিক্ষার্থী ভর্তি হন ১০৮ জন। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। শ্রেণিকক্ষ না থাকায় কখনো এই বিভাগ, কখনো ওই বিভাগে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। একই অবস্থা ফিজিক্যাল এডুকেশন ও স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা অনুষদের অধীনে চালু হওয়া এই বিভাগে শিক্ষার্থী আছেন ১৪১ জন। চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে গত বছরের শুরুর দিকে একবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে ৩০ নিয়োগ প্রার্থী আবেদন করেন। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যোগ্যতার শর্ত না মেলায় আর শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে অন্যান্য বিভাগ থেকে ধার করা শিক্ষক নিয়েই এই শ্রেণি কার্যক্রম চলছে।

শুধু স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ নয়, শিক্ষক সংকট ও শ্রেণিকক্ষের সংকট নিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের অধীনে চালু হয় সংগীত বিভাগ। বর্তমানে বিভাগে শিক্ষার্থী আছেন প্রায় ১০০। শিক্ষক মাত্র তিনজন। এই বিভাগের জন্য এখনো কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই, অনুশীলন কক্ষ নেই। শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত হয় অনুষদের গ্যালারি কক্ষে। গ্যালারিতে অনুষ্ঠান থাকলে শ্রেণি কার্যক্রমও থমকে থাকে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, সদ্য বিদায়ী উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিনের আমলে ছয়জন শিক্ষক নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। এ কারণে অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়েই শ্রেণি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। 
শ্রেণিকক্ষ সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল সমস্যা শ্রেণিকক্ষের। সংগীত ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের জন্য কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই। এতে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

সূত্র জানায়, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে চালু হয় ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগ। এখানে বর্তমানে পাঁচ ব্যাচে শিক্ষার্থী আছেন ৮৫৭ জন। তবে এই বিপুল শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক আছেন মাত্র ছয়জন। একই সংকট ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগে। এখানে শিক্ষার্থী আছেন ৬৭৯ জন। বিপরীতে শিক্ষক আছেন মাত্র পাঁচজন। সে হিসেবে প্রতি ১৩৫ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রয়েছেন এই বিভাগে।

অন্যদিকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ চালু হয়েছে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে। বর্তমানে এখানে শিক্ষার্থী আছেন প্রায় ৬৫০ জন। কিন্তু এই বিভাগেও পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। মাত্র আটজন শিক্ষক দিয়েই কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হচ্ছে। এ ছাড়া ওশানোগ্রাফি বিভাগ ও ফিশারিজ বিভাগেও শিক্ষকসংকট রয়েছে। গত বছর এই দুই বিভাগ চালু করা হয়। এখানে শিক্ষক রয়েছেন মোট ছয়জন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই বিভাগ মিলিয়ে ৩৩৩ জন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষার্থীরা বলেন, অন্য বিভাগের শ্রেণিকক্ষে গিয়ে তাঁদের বসতে হয়। কখনো দাঁড়িয়েও থাকতে হয়। শিক্ষক না থাকায় সঠিক নির্দেশনাও অনেক সময় পান না তাঁরা। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, বিভাগ খোলার আগে একটি পরিকল্পনা থাকা উচিত। শিক্ষক, অবকাঠামো, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে বিভাগ খোলা দরকার। তিনি বলেন, পরিকল্পনা না করে বিভাগ খুললে শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই অবশ্যই এসব বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063621997833252