জুনে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের শঙ্কা - দৈনিকশিক্ষা

জুনে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশে করোনা শনাক্ত হারের সর্বনিম্ন রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হার ছিল শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ। এর আগে সর্বনিম্ন শনাক্ত হার ছিল এ বছরের ১২ এপ্রিল, শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ ২৩ দিনের মাথায় সর্বনিম্ন শনাক্ত হারের নতুন রেকর্ড হলো।

একইভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বনিম্ন ৪ জন রোগী শনাক্তের তৃতীয় রেকর্ড হয়েছে। এখন পর্যন্ত দৈনিক রোগী শনাক্তের সর্বনিম্ন রেকর্ড রয়েছে গত ২০২০ সালের ৮ মার্চ। সেদিন ১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দুজন রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয় সে বছরেরই ২ এপ্রিল। সে হিসেবে দুই বছর এক মাস পর গত ২৪ ঘণ্টায় তৃতীয় সর্বনিম্ন ৪ জন রোগী শনাক্তের রেকর্ড হলো দেশে। এমনকি ১৫ দিন ধরে করোনায় মৃত্যুশূন্য রয়েছে দেশ এবং ১৮ দিন ধরে শনাক্তের হার ১ শতাংশের নিচে। সর্বশেষ ১ জনের মৃত্যু হয়েছিল গত ২০ এপ্রিল এবং ১৭ এপ্রিল শনাক্তের হার ১ শতাংশের সামান্য বেশি ১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ হয়েছিল। এরপর গতকাল পর্যন্ত শনাক্ত হার ১ শতাংশের নিচেই রয়েছে।

বাংলাদেশ এখন করোনা সংক্রমণের সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে বলে জানান সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইসিডিডিআর,বি) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি গতকাল  বলেন, ‘দেশে এখন করোনার বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন সংক্রমণ হচ্ছে। আশা করছি সবাই মিলে চেষ্টা করলে এ বছরই করোনার জরুরি পরিস্থিতি অতিক্রম করতে পারব। কারণ আমাদের টিকাদানের অবস্থা ভালো। করোনার কিছু ওষুধ বের হয়েছে। ডায়াগনসিসও দ্রুত করা যায়। দু’বছরে আমরা অনেক কিছু জেনেছি। সবাই মিলে চেষ্টা করলে অ্যাকুইট ফেস অব প্যানডেমিক উইল বি ওভার।’

জুনে চতুর্থ ঢেউ আসতে পারে : আগামী মাসে চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, করোনার টিকা নিলে তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত শরীরে করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে। এ সময়ের মধ্যে আবার আগের ফর্মে পুনরায় সংক্রমিত হতে পারে। বাংলাদেশে মার্চের শেষ দিক থেকে সংক্রমণের নিম্নহার চলছে। শনাক্তের হার ১ শতাংশের নিচে। সে হিসেবে জুনের দিকে একটা নতুন ঢেউয়ের ঝুঁকি রয়েছে। তবে টিকার কাভারেজ ভালো থাকে, হাসপাতাল থেকে যদি সংক্রমণ না ছড়ায় এবং যার যার পরিবার যদি সতর্ক থাকে, তাহলে চতুর্থ ঢেউ এলেও ও সংক্রমণ কিছুটা ছড়ালেও ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হব না। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, ৫০ বছরের ওপরে যাদের বয়স বা দীর্ঘদিন ধরে যারা রোগে ভুগছেন, তাদের শতভাগকে টিকার আওতায় আনতে হবে। 

করোনা শূন্য হলেও করোনামুক্ত বলা যাবে না : ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, সারা পৃথিবী থেকে মহামারী দূর না হলে কোনো দেশ এককভাবে করোনা শূন্য ঘোষণা করতে পারে, কিন্তু মহামারীমুক্ত ঘোষণা করতে পারে না। বাংলাদেশ করোনা সংক্রমিত হওয়ার সর্বশেষ ধাপ করোনাশূন্যও হতে পারে, যেমন মৃত্যুশূন্য আছে বেশ কিছুদিন। কিন্তু কিছুতেই করোনামুক্ত বলা যাবে না। করোনা সংক্রমণকে যেসব দেশ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, সেসব দেশের প্রথম সারিতে রয়েছে চীন। এ ছাড়া তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম, জাপান, নিউজিল্যান্ড, ভুটান, থাইল্যান্ডও করোানা নিয়ন্ত্রণে বেশ সফল। কিন্তু সেই চীনের সাংহাইয়ে করোনা কিছুটা কমেছে, এখন পেইচিংয়ে হচ্ছে। কাজেই একজন মানুষ বা জনগোষ্ঠী যদি মনে করে করোনা চলে গেছে, সতর্ক থাকব না, সে কিন্তু শেষ মুহূর্তে আক্রান্ত হয়ে বিপদে পড়তে পারে।

এখনো করোনা মহামারীর জন্য আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ, বিশেষ করে সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলো বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, এসব দেশে টিকা নেওয়ার হার খুবই কম। টিকার অভাব নেই, কিন্তু সেখানে টিকা খুব গুরুত্ব পাচ্ছে না, টিকাদানে নানা সংকট রয়েছে সেখানে। কাজেই গোটা বিশ্ব মিলে ব্যবস্থা না নিলে ওখান থেকেই নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হবে। এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার দুটি নতুন মৃদু ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সেটা ওমিক্রন থেকে ভিন্ন কিছু প্রমাণিত হয়নি, কিন্তু হতে কতক্ষণ।

২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত এক দিনে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে শুধু দুই জেলায় চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ সময় করোনায় কেউ মারা যায়নি।

গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে যে চারজন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকার এবং একজন কক্সবাজারের বাসিন্দা। দেশের বাকি ৬২ জেলায় কোনো নতুন রোগী শনাক্ত হয়নি। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশে। আগের দিন এই হার শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৭ জন এবং মৃত্যু ২৯ হাজার ১২৭ জন। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061421394348145