বিশ্ব মহাসাগর দিবস আজ - দৈনিকশিক্ষা

বিশ্ব মহাসাগর দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আজ বিশ্ব মহাসাগর দিবস। প্রতি বছর ৮ জুন  এ দিবসটি পালিত হয়। ‘জীবন ও জীবিকা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব মহাসাগর দিবস। জীবনে মহাসাগরের গুরুত্ব কতটা সেটি বোঝাতে এবং পানি দূষণ এড়ানে জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রতিবছর জাতিসংঘ কর্তৃক ৮ জুন বিশ্ব মহাসাগর দিবস উদযাপন করা হয়।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

মহাসাগরের সঙ্গে সম্পর্কিত আমাদের জীবন। অথচ এই মহাসাগর দূষিত হয় আমাদেরই অসচেতনতায়। মহাসাগর হলো উদ্ভিদের ভান্ডার, বহু প্রজাতির প্রাণী এবং গুরুত্বপূর্ণ জীবের আবাসস্থল।

মহাসাগর বিপুল জলরাশি নিয়ে গঠিত। যা পৃথিবীকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে। বিশ্বে স্বীকৃত ৫টি মহাসাগর আছে- প্রশান্ত, আটলান্টিক, ভারতীয়, আর্টিক এবং দক্ষিণ। এই মহাসাগরগুলো একত্রে পৃথিবীর মোট আয়তনের প্রায় ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ স্থান দখল করে আছে। এ বিপুল জলরাশি আবার অনেকগুলো মহাসাগর ও ছোট ছোট সমুদ্রে বিভক্ত।

বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুসারে, মহাসাগরে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার সামুদ্রিক ও জলজ প্রাণী আছে। প্রকৃতপক্ষে সামুদ্রিক ও জলজ প্রাণীর সংখ্যা নির্ণিত সংখ্যার তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। পৃথিবীর তাপমাত্রা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মহাসাগরের জীব বৈচিত্র্য।

সমুদ্রের মানুষের কাছে জীবন ও জীবিকার উৎসস্থল। বহু মানুষ আছেন, যারা সমুদ্র থেকেই উপার্জন করে থাকে। এই মহাসাগরগুলো পুরো বিশ্বকে প্রোটিন সরবরাহ করে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

অর্থনীতিতে শক্তিশালীকরণ এবং কর্মসংস্থান সরবরাহে মহাসাগরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০৩০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বিশ্বের ৪০ মিলিয়ন মানুষ সমুদ্র ভিত্তিক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে অনুমান করেন বিশেষজ্ঞরা।

ওশান বা মহাসাগর দিবস উদযাপনের আলোচনার বিষয়টি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের রিও ডি জেনিরোতে আর্থ শীর্ষ সম্মেলনে। পরবর্তীতে ২০০৪ থেকে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দ্য ওশান প্রজেক্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে মহাসাগরীয় জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এবং বিশ্ব মহাসাগর দিবস উদযাপনের বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যায়।

ওই প্রচারণা আর ধরিত্রি সম্মেলনের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ বিশ্ব মহাসাগর দিবস আন্তর্জাতিকভাবে পালনের ঘোষণা দেয়। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিবছরের ৮ জুন সারা বিশ্বব্যাপী বিশ্ব মহাসাগর দিবস পালন করা হয়।

পৃথিবীতে প্রাণীকূলের টিকে থাকার জন্য মহাসাগরীয় পরিবেশ রক্ষা করা একটি উল্লেখযোগ্য এবং অবশ্যপালনীয় শর্ত। দৈনন্দিন নানাবিধ বিষয়ে আমরা সবাই সাগরের উপর নির্ভরশীল। ওষুধ, খাদ্য এমনকি বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের একটা বিশাল ভাণ্ডার আমাদের এই সাগর বা মহাসাগরগুলো।

তবে প্রতিনিয়ত মনুষ্যসৃষ্ট দূষণ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনে মহাসাগরগুলোর পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। প্রতিদিন একটু একটু করে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মহাসাগরের প্রতিবেশব্যবস্থা আর সেইসাথে ধ্বংস হচ্ছে মহাসাগরীয় জীববৈচিত্র।

মৎসভাণ্ডারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংস, গ্রীস্মমন্ডলীয় অঞ্চলে কোরাল রিফগুলোর নিয়মিত ধ্বংস হওয়া ইত্যাদির কারণে আজ মহাসাগরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচার ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই প্রতিবছর আন্তর্জাতিকভাবেই বিশ্ব মহাসাগর দিবস পালন করা হয়।

আপনার ছোট ছোট পদক্ষেপে সমুদ্র দূষণ কমতে পারে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং চারপাশের মানুষকেও সমুদ্রের গুরুত্ব সম্পর্কে জানাতে হবে। সমুদ্রে বেড়াতে গেলে আমরা জেনে বা না বুঝে বিভিন্ন খাবারের প্যাকেটসহ বোতল বা প্লাস্টিক ইত্যাদি পানিতে ফেলে দূষিত করি।

জানেন কি, প্লাস্টিকগুলো সমুদ্রের প্রতি বর্গমিটারে ৫.১ মিলিগ্রাম প্লাস্টিক পলিমার ঘনত্বসহ প্রধান দূষণকারী। এগুলি সৌর বিকিরণের দ্বারা অবনমিত হয় এবং কার্বন-ডাই-অক্সিনের মতো পানিতে বিষাক্ত পদার্থ ছেড়ে দেয়।

জাতিসংঘের একটি সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর ৫০ লাখ থেকে দেড় কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে প্রবেশ করে। এর একটা বড় অংশ যায় মাছ ও সামুদ্রিক পাখিদের দেহে। এমনকি সমুদ্রের তলদেশে থাকা প্রাণীদের শরীরেও প্লাস্টিকের সন্ধান মিলেছে।

জাতিসংঘের একটি সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর ৫০ লাখ থেকে দেড় কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে প্রবেশ করে। এর একটা বড় অংশ যায় মাছ ও সামুদ্রিক পাখিদের দেহে। এমনকি সমুদ্রের তলদেশে থাকা প্রাণীদের শরীরেও প্লাস্টিকের সন্ধান মিলেছে। তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবার উচিত সমুদ্র রক্ষায় সচেতন থাকা।

বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানার মধ্যে শুধু বিপুল মৎস্যভান্ডার নয় আছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের ভান্ডারও। বিশেষ গঠন-প্রকৃতির কারণেই তেল-গ্যাসসহ নানান খনিজসম্পদ সঞ্চিত আছে সাগরের তলদেশে। প্রাকৃতিক ও খনিজসম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশই তাদের টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচীর মাধ্যমে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

বাংলাদেশের মতো একটি উপকূলীয় রাষ্ট্রের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সমুদ্র পরিবহন ও বন্দর সহযোগিতা বৃদ্ধি, মৎস্য আহরণ, মৎস্য রফতানি, পর্যটন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ, সর্বোপরি জীববিজ্ঞান ও সমুদ্রবিজ্ঞান প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়নের একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হওয়ার উত্তম সম্ভাবনা আছে।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003324031829834