শিশুদের পাঠদানে সতর্কতা - দৈনিকশিক্ষা

শিশুদের পাঠদানে সতর্কতা

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর। শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। এ পেশার মর্যাদা সর্ব শীর্ষে। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষকরা আজও অসহায় ও যথাযথ মর্যাদা বঞ্চিত। শিক্ষকেরা বর্তমানে ২য় ও ৩য় শ্রেণির মর্যাদায় আসীন। যা দেশ ও জাতির জন্য শুভ নয়।

শিক্ষক ও ইমামদের এ দেশের মানুষ শ্রদ্ধা ও ভক্তি করে থাকেন। সে প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে শিক্ষক ও ইমামদের অনেকটা সতর্কতার সাথে কাজকর্ম করতে হবে। নানা পেশার মানুষের বড় ধরনের ভুলও সাধারণত দৃশ্যমান হয় না। অথচ শিক্ষক ও ইমামদের সামন্য ত্রুটি সকলের দৃষ্টিগোচর হয় সহজে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়।

গত ২৯ এপ্রিল সংসদ টিভিতে এক শিক্ষিকার প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণির অঙ্কের ভুল নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। অঙ্কটি একটি সাধারণ যোগ অঙ্ক। যা চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী নির্ভুলভাবে করতে পারবে। এখানে শিক্ষকের যোগ্যতা বা জ্ঞানের পরিধি খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। ভুল যে কারো হতেই পারে। প্রথমত, অনেকেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বিচলিত হয়ে যান, অস্থিরতায় ভুগেন। দ্বিতীয়ত, যে কোনো মানসিক অস্থিরতা মানুষকে বেখেয়ালি করতে পারে। অঙ্কটি যে ভুল এদেশের সচেতন মানুষ তা ধরতে ফেলতে পারলেন, একজন অঙ্কের শিক্ষকও নিশ্চয়ই সে ভুল সচেতনভাবে করেননি। আমার ধারণা, সে সময় কোনো ধরনের মানসিক অস্থিরতায় তিনি কিছুটা বেসামাল বা বেখেয়ালি হয়ে ভুলটি করেছেন।

সারা বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাসের মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত। তবে এ আতঙ্ক শিক্ষকের মাঝে কতটুকু মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে জানি না! প্রকাশ হওয়ার আগে শিক্ষক যদি পুনরায় পাঠের ভিডিও দেখতে পারতেন বা দেখতেন তাহলে হয়তো ভুলটি হতো না। যারা ভিডিও রেকর্ড করেছেন বা এডিটিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন তাদেরও অসতর্কতা রয়েছে। পাঠদানের ভিডিওটি পরীক্ষা করে ভুল সংশোধন করে প্রচার করা হলে আজ কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হতো না। প্রাথমিকের মহাপরিচালক ভবিষ্যতে পাঠদানের বিষয়টি অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করে পর্যবেক্ষণের আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নানা কাজের চাপের মাঝে পাঠদান করে থাকেন। পাঠদান বহির্ভূত অসংখ্য কাজ, শিক্ষক সংকট, নানা প্রকার কমিটির অহেতুক খবরদারির পাশাপাশি বছরের পর বছর নানা সমস্যা জিইয়ে রেখে মানসিক অস্থিরতায় রাখা হয় শিক্ষকদের। যেমন বিধিবহির্ভূত ৩ বছরের শ্রান্তি বিনোদন ভাতা ৪ বছর পরে দেয়া, বেতন বৈষম্য, পদোন্নতি নিয়ে সময়ক্ষেপণ ও প্রাথমিকের কর্মঘণ্টার বৈষম্য। পত্র পত্রিকায় বছরের পর বছর লেখালেখি, আবেদন নিবেদন করেও বিষয়গুলোর কোনো সুরাহা করা যাচ্ছে না।

শত বাধা বিপত্তি সত্বেও প্রাথমিক শিক্ষকদের পাঠদানের ব্যাপারে অধিকতর সতর্ক হতে হবে। তাদের মাধ্যমে আগামী প্রজন্ম জ্ঞানে-গুণে সমৃদ্ধ হয়ে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদেরও প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর থেকে পাঠদানে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় এমন সকল কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে।

শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর পাঠে অধিকতর মনোযোগী হোক সে প্রত্যাশা রইলো।

লেখক :  মো. সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ; সম্পাদকীয় উপদেষ্টা, দৈনিক শিক্ষাডটকম।

পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029850006103516