আজ হোক কাল হোক বেসরকারি শিক্ষা একদিন সরকারিকরণ হবেই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। দেশ যেভাবে এগুচ্ছে তাতে বেসরকারি শিক্ষা সরকারিকরণ খুব একটা দূরে নয়- এমনটাই মনে করেন দেশের শিক্ষিত মহল।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারিকরণের গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলেন। তাই তিনি একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতির ওপর দাড়িয়ে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে সরকারিকরণ করেছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যা, বর্তমান সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাব্বিশ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করেছেন। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারি করেছেন।
শুধু তাই নয় নীতিমালা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণেরও ঘোষণা দিয়েছেন। সাবেক শিক্ষা সচিব জনাব নজরুল ইসলাম স্যারের কাছে সব বেসরকারি শিক্ষা সরকারিকরণের ব্যায়ের হিসেবটিও জনতে চেয়েছেন। যা দেশের বেসরকারি শিক্ষকদের সরকারিকরণের ব্যাপারে আশাবাদী করে তুলেছে।
বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষকদেরকে তাদের স্কেলের শতভাগ বেতন দেয়া হয়। দুটি উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা, কম করে হলেও বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতাটাও দেয়া হয়। বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত মহার্ঘ ভাতাটাও তারা পান। এযাবৎকালের সব জাতীয় পে-স্কেলের আওতায়ও আনা হয়েছে তাদেরকে। সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ন্যায় বাৎসরিক ৫শতাংশ প্রবৃদ্ধিও দেয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রচুর বরাদ্ধ দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে সরকারিকরণ থেকে তারা খুব একটা দূরে নয়।
বর্তমান সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে অনেক দুঃসাহসিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। নিজস্ব অর্থায়নে অত্যন্ত ব্যয়বহুল পদ্মা সেতুর কাজ আজ বাস্তবায়নাধীন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য ব্যয়বহুল এমনি অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তাই বেসরকারি শিক্ষকগণ আশা করছেন, বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারই পারবে দেশের সব বেসরকারি শিক্ষা সরকারিকরণের মতো দুঃসাহসিক কাজটি সম্পাদন করতে।
দেশের সব শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মনে করেন- বেসরকারি শিক্ষা সরকারিকরণ করা হলে সরকারই লাভবান হবে। কারন, প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রয়েছে শিক্ষার্থীদের বেতন, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, জেনারেল ও রিজার্ভ ফান্ডসহ বিভিন্ন ধরনের আয়ের উৎস।
এই মুহুর্তে যদি শিক্ষক নেতৃবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বুঝাতে পারেন তাহলে সরকারিকরণ সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই দেশের পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারী এই মুহুর্তে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন সেই শুভক্ষণটির। যাতে ইতিহাস হয়ে থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থান পাবেন পাঁচ লক্ষাধিক বেসরকারি শিক্ষকের হৃদয়ের মণিকোঁঠায়।
লেখক: শিক্ষক