বিশ্ব মহামারী করোনার প্রার্দুভাবের কারণে দীর্ঘ বিরতির পর রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সরকারি নির্দেশনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ১৯টি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে, মাঠে ও রাস্তায় বন্যার পানি থাকায় ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। পানি ওঠা কয়েকটি বিদ্যালয়ে সকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসলেও দূর্ঘটনা এড়াতে একটি ক্লাসের পর তাদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কালিয়াকৈর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ১৯টি বিদ্যালয় কক্ষে, মাঠে ও স্কুলে আসার রাস্তায় বন্যার পানি থাকায় এসব বিদ্যালয়ে সরকারি ঘোষিত দিনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো উত্তর রাজাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে পানি), বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক দ্যিালয় (মাঠে পানি), বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে ৫ফুট পানি), বাসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে ও শ্রেণি কক্ষে পানি),মুদিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কক্ষে পানি),কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে পানি ও শ্রেণি কক্ষের মাটি ধসে গেছে), ঢালজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ((মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি), বাঙ্গুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে পানি), চৌধুরীর টেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে দুই ফুট পানি), দেওয়াইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে তিন ফুট পানি), সেওড়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে পানি), সাদুল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠে পানি), সেওড়াতলী বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ((মাঠে পানি ও টয়লেট ডুবে গেছে), হেলেনা জাব্বার কুন্দাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (মাঠের চারদিকে পানি), টেকিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (স্কুলের সামনের কাঁচা রাস্তা ভেঙে গেছে), চাপাইর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ((স্কুলের মাঠে নদীর পানি উঠেছে), কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় পানি), টালাবহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় পানি) এবং বারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় পানি)।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলাম আরও বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের মাঠে শ্রেণিকক্ষে এবং রাস্তায় পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। পানি কমে গেলে পর্যায়ক্রমে এসব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাসুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মালেক হোসেন দৈনিক শিক্ষডটকমকে বলেন, বিদ্যালয় খোলার খবরে সকাল থেকেই শিক্ষর্থীরা বিদ্যালয় এসেছিল। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১০জন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসায় প্রথমদিন ক্লাস নেওয়া হলেও পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ছুটি দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয় মাঠে বন্যার পানি থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনারোধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে আবার ক্লাস শুরু হবে।
বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তুরাগ নদী। সেখান থেকেই পানি বিদ্যালয়ের মাঠ ও বিদ্যালয়ে আসার পথ বন্যার অথই পানিতে ডুবে থাকায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। তাদের কোন ক্লাস হয়নি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয় মাঠে ও প্রবেশের সড়কে বন্যার পানি থাকায় কালিয়াকৈর উপজেলার ১৯টি বিদ্যালয়ে কোন ক্লাস হয়নি। বন্যার পানি কমে গেলে ক্লাস না হওয়া বিদ্যালয়গুলোতে যথারীতি ক্লাস নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ধরে রাখতে ওয়ার্ক শিট, বাড়ির কাজ, অনলাইন ক্লাস, মোবাইল ফোন ও বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।