ছোটবেলায় গানের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল। একটা গানের কলি এ রকম শুনেছিলাম : ‘খোকনসোনা বলি শোনো, থাকবে না আর দুঃখ কোনো, মানুষ যদি হতেই পারো।’
মা-বাবা এমন করেই তাদের সন্তানদের নিয়ে ভবিষ্যৎ স্বপ্ন দেখে থাকেন। কখনো-সখনো সে স্বপ্ন বাস্তবেও রূপ নেয়। আবার অনেক সময় সন্তান বড় হয় বটে, কিন্তু মানুষের মতো মানুষ হয় না। লালন গেয়েছিলেন, ‘এই মানুষে আছে রে মন, যারে বলে মানুষ রতন।’ শনিবার (০৬ আগস্ট) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত উপসম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
উপসম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, মানুষের মধ্যে এই ‘মানুষ-রত্ন’ জেগে না উঠলে পরিবেশভেদে সে অমানুষ হয়, কখনো মানুষ নামের কলঙ্ক হয়, সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, জুলুম, খুনাখুনি, দুর্বলের প্রতি সবলের আধিপত্য কি বেড়ে যাচ্ছে? বিবেকবোধ, মনুষ্যত্ব, উদারতা, লোকলজ্জা ইত্যাদি মানবিক গুণ ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে? ‘সেই মানুষ’ কোথায় গেল? কেন গেল? এর দায় কার?
আমরা বলি, প্রত্যেক মানুষের মধ্যে মানুষরত্ন লুকিয়ে আছে। তাকে বের করে আনতে হয়, উপযুক্ত পরিবেশ ও শিক্ষা দিয়ে লালন করতে হয়, কাজে লাগাতে হয়। তারপর একটা মানুষ ‘মানুষ’ হয়। তাতে তার নিজের, সমাজের, দেশ ও দশের কল্যাণ হয়। উপযুক্ত সুশিক্ষার মাধ্যমেই কেবল মানুষকে প্রকৃত মানুষ, সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠী এবং জনসম্পদে পরিণত করা যায়, সঠিক পথে চালানো যায়।
শিক্ষা দরকার প্রথমত নিজের সুষ্ঠু চিন্তা-চেতনাবোধ, পরিশীলিত বিবেক ও সচেতনতা, মঙ্গল-অমঙ্গল বোঝা, পেশা নির্বাচন, আদর্শ পরিবার গঠন, ভালো মন্দ পৃথক করতে পারার ক্ষমতা অর্জনের জন্য; সুখ-শান্তিতে বসবাসের উপযুক্ত প্রগতিশীল সামাজ গঠনের জন্য; উন্নত চিন্তা ও সেবার মাধ্যমে আদর্শ ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনে অবদান রাখার জন্য। দ্বিতীয়ত, সৃষ্টির কল্যাণ ও স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা, ইবাদত, উপাসনা, প্রার্থনা করার জন্য। তৃতীয়ত, নিজের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুকুমার সৃষ্টিধর্মী প্রতিভার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের জন্য।
প্রশ্ন, আমাদের দেশে কি সে ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা ও পরিবেশ আছে? বর্তমানে সরকার প্রাইমারি ও মাধ্যমিক পর্যায়ে কাঠামোগত কিছু পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে। এটা ভালো। এতে শিক্ষার মান ও গুণগত পরিবর্তন কতটুকু হবে, প্রশ্ন থেকে যায়। শিক্ষার মান অনেকটাই পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। সরকারকে এদিকটা বেশি করে ভাবতে হবে। কর্মমুখী ও জীবনমুখী শিক্ষার দিকে যেতে হবে।
শিক্ষা এবং লেখাপড়া জানা বা অক্ষরজ্ঞান থাকা এককথা নয়। মানুষ শেখে সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে সামাজিক শিক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা-দুটোর মানই ব্যর্থতার গ্লানিতে ভরা। শিক্ষার বর্তমান অবস্থা নিয়ে এ দেশের সচেতন মহল সম্যক অবহিত। এ অস্বস্তিকর অবস্থায় নির্বাক হয়ে কিংবা হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় একদম নেই। করণীয় করতে হবে, পরিবর্তন আনতে হবে; নইলে পরিণতি আরও ভয়াবহ হতে বাধ্য।
সাধারণ স্কুল-কলেজের কথাই বলি। লেখাপড়ায় লেখাও নেই, পড়াও নেই। নেই চিন্তা করতে শেখা, বিশ্লেষণের ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা, মানবিকতা, দেশপ্রেম, সামাজিক মূল্যবোধ, সত্যের সাধনা, চিন্তাধারার উৎকর্ষ, জানার পিপাসা, শিক্ষা নিয়ে ভাবুক মন, গভীর আত্মজিজ্ঞাসা বা অধ্যবসায়।
আছে শুধু নোটবই-গাইডবই বিক্রি, মোসাহেবি আর টিউশনি। সঙ্গে মুখস্থ কিছু উত্তর শিখে টিক চিহ্ন দিয়ে ওপর ক্লাসে ওঠার ব্যবস্থা। আছে অলীক কল্পনা, সার্টিফিকেট প্রাপ্তির তৃপ্ত ঢেঁকুর, বেকারত্ব, দলবাজির উদগ্র স্লোগান, মনোবৈকল্য, মিথ্যার বেসাতি, ভোগবাদী মানসিকতা। শিক্ষা থেকে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা বিদায় নিয়েছে কেন?
এসব দোষ তো আর ছেলেমেয়েদের দিয়ে পার পাওয়া যাবে না! বাবা-মায়ের দিকে, শিক্ষকদের দিকে, পরিবেশ-পারিপার্শ্বিকতার দিকে চোখ তুলে তাকাতে হবে। হাতেগোনা অল্প কিছু ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শেখে, কিংবা জ্ঞানার্জন করে-তা শেখে তার নিজের আগ্রহের কারণে, সচেতন বাপ-মায়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান, উপদেশ ও প্রেরণার কারণে।
এগুলোতে আত্মপ্রসাদে তৃপ্তির ঢেঁকুর না তোলাই ভালো। ছেলেমেয়েকে স্কুল-কলেজে পড়তে হয়, আবার শহর-গ্রাম নির্বিশেষে বাসায় টিউটর রেখে আলাদা তালিম নিতে হয়। লেখাপড়াটা আনন্দময় না হয়ে দুর্বিষহ ও ভীতিকর হয়ে ওঠে।
বর্তমান শিক্ষকদের সামাজিক অবস্থান ও শিক্ষকসুলভ অবস্থাও বেশ নাজুক। এটা তাদের অপকর্ম ও অপচিন্তার ফসল। শিক্ষকদের ইস্পাতকঠিন নৈতিকতা, ন্যায়নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণতা আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। অনেক শিক্ষক নিজেদের আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে দুর্নীতি, ফাঁকিবাজি, অব্যবস্থা, বাতিল মতামতের প্রতি আনুগত্য, মোসাহেবি করে শিক্ষকতা পেশাকে সামাজিক অবস্থানের নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে এবং আত্মবিস্মৃত হয়ে জাত্যাভিমানী শিক্ষাগুরুর মর্যাদা হারিয়েছে।
এর প্রভাব সমগ্র জাতি ও শিক্ষাব্যবস্থার ওপর পড়েছে। শিক্ষকদের আবার বেতনও কম, তাতে পেট চলে না। মেধাবীরা তাই শিক্ষকতা পেশায় আসতেও চান না। এ দেশে আদর্শ বৈশিষ্ট্যের শিক্ষকইবা বর্তমানে কজন! এ প্রজাতির শিক্ষক ক্রমশই বিলুপ্তির পথে।
শিক্ষার মান নিম্নমুখী, নৈতিকতার মান আরও নিম্নমুখী। মানবিকতা ও সততার স্তর সর্বনিম্ন পর্যায়ে; বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত। তাহলে শিক্ষার চিকিৎসকরা কি ভুল ব্যবস্থাপত্র বাতলাচ্ছেন? চিকিৎসা কি ব্যর্থ হতে চলেছে? আমরা কি দিগ্ভ্রান্ত হয়ে গেছি? এক্ষেত্রে জাতির ভবিষ্যৎ কী? এ জাতি কি তাহলে অন্য কোনো সম্প্রসারণবাদী ভিনদেশি গোষ্ঠীর গোলামি করে খাবে? শিক্ষার আলো না থাকলে বুনো গাঢ় আঁধারে চারদিক ছেয়ে যাবে, এটাই প্রকৃতির অবশ্যম্ভাবী নিয়ম।
মাদ্রাসা শিক্ষায়ও কয়েকটা ভাগ। কওমি মাদ্রাসা, আলিয়া মাদ্রাসা এবং মক্তব/নুরানি ও ফুরকানিয়া/হাফেজিয়া মাদ্রাসা। এখানে সমগ্র জীবনে সৃষ্টি-স্রষ্টার চিন্তাধারা, উদ্দেশ্য ও জীবন-কর্ম শুধু পরকালের বেহেশত নসিবের সরু গলিতে আটকে গেছে। ধর্মটাকেই পুরো পেশা বানিয়ে ছেড়েছে। উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনের শিক্ষা নেই বললেই চলে।
ভিন্ন কোনো উচ্চমানের পেশায় যাওয়ারও প্রচেষ্টা নেই। মাদ্রাসা শিক্ষা মুসলমানদের সভ্যতা, ইমান, বৈশিষ্ট্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ঐতিহ্যকে প্রাগ্রসর প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রগতিশীল না করে অজ্ঞতা ও চিন্তার বিকলতা দিয়ে পেছনের দিকে ফিরিয়ে আদিম যুগে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ সেখানেও অবিকশিত প্রতিভাবান ছেলেমেয়ে রয়ে গেছে।
মুসলিম সভ্যতার ইতিহাস বলে-মুসলমানরা জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-সাহিত্য-শিল্প-দর্শন ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই স্থান দখল করে রেখেছিল। মুসলমানরা রসায়নবিজ্ঞান, গণিতশাস্ত্র, জ্যোতির্বিজ্ঞান, আলোকবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, অস্ত্রচিকিৎসা, ভূ-তত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য দেখিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রপথিক হিসাবে ইতিহাসের পৃষ্ঠাকে অলংকৃত করে রেখেছিল।
বিগত চল্লিশ বছরে মক্তব-মাদ্রাসা অনেকগুণ বেড়েছে। কোরআন-হাদিস পড়া, মিলাদ-মহফিল করা লোক অসংখ্য বেড়েছে, বেড়েছে শ্রোতার সংখ্যাও। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বেকারত্ব। বাড়েনি সমাজে, অফিস-আদালতে কর্মরত সুস্থ চিন্তা-করা, জ্ঞানী-দূরদর্শী, কর্মঠ সৎ মানুষের সংখ্যা-তাই পরিবেশ গেছে নষ্ট হয়ে। গলদটা কোথায়? মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষা-কর্তৃপক্ষের বিষয়টি আশু ভাবনার খোরাক।
হালকা আবেগ ও গোঁড়ামি দিয়ে সুশিক্ষিত ও প্রাগ্রসর জাতি গড়া যায় না। শিক্ষার ভিত্তিমূলে যার যে ধর্ম, তাকে সে ধর্ম সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে শিখতে হবে। ধর্ম থেকে আহরিত মানবতার ধর্ম জীবন চলার পাথেয় হিসাবে নিতে হবে। সৃষ্টি ও স্রষ্টার কল্যাণে তা কাজে লাগাতে হবে। যার যেমন খুশি, উচ্চশিক্ষা কিংবা টেকনিক্যাল শিক্ষা নিয়ে নিজ নিজ পেশায় জীবন পরিচালনা করবে।
এ বিশ্বে বিভিন্ন বিষয়ে মতবাদের অভাব নেই। মানবজাতির একটা অংশ কুরুচিপূর্ণ ও বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন; এটা তো সৃষ্টির প্রথম থেকেই আছে। এরা মনুষ্য প্রজাতিকে কিছু কিছু উদ্ভট-উদ্ভ্রান্ত মতবাদ দিয়ে অন্যান্য ইতর প্রাণীর পর্যায়ে নিয়ে দাঁড় করাতে চায়। এদের কাছে পুরো মানবসমাজ ও মানবসভ্যতা আত্মসমর্পণ করতে পারে না। এদের অনুপাত যত বাড়বে, বিশ্বশান্তি-স্থিতি ততো বিঘ্নিত হবে। তাই কোনো দ্ব্যর্থ-মতবাদ প্রয়োগ করতে গিয়ে অদূরদর্শিতা ও নির্বুদ্ধিতা করা একেবারেই চলে না।
এতে এ বিশ্বচরাচরে মানবজাতির সাবলীল ও সৃষ্টি-সেরা জীবনযাপন দুরূহ হয়ে পড়ে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ আস্তিক-নাস্তিক কিংবা সন্দিগ্ধমনা হলে কারও কিছু যায়-আসে না। এটাকে মেনে নেওয়াই ভালো। কিন্তু হালকা জ্ঞান দিয়ে যে কোনো ধর্মেরই খারাপ দিক নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি কখনোই ভালো না, বা কুৎসিত মন্তব্যও করা উচিত না। তা কেউ ধর্ম পালন করুক, চাই না-করুক।
উন্নয়ন কথাটা ভাবার আগে জনগোষ্ঠীর শিক্ষার উন্নয়নের কথাটা আগে চলে আসা দরকার। শিক্ষার উন্নয়ন মানে জনগোষ্ঠীর মানসিকতার উন্নয়ন। নির্মাণকাজে রডের ব্যবহারের পরিবর্তে বাঁশের ব্যবহার, একটা বালিশ উপরতলায় উঠাতে হাজার টাকার কাছে ব্যয় এবং এমনই শত-সহস্র বাস্তব ঘটনাকে উদাহরণ হিসাবে অবতারণা করা যাবে। আমি উন্নয়ন বলতে অবকাঠামোগত উন্নয়নকে বুঝি না; কোনো দেশে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মানসিক উন্নয়নের প্রশস্ততাকে বুঝি।
ইস্পাত ছাড়া যেমন খালি লোহার ছুরি অচল, তেমনি উপযুক্ত শিক্ষা ছাড়া মানসিক উন্নয়নের প্রশস্ত পথের ভাবনাও অবান্তর। আগে জনগোষ্ঠীকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন, সে সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্পোন্নয়নসহ শতেক বহুমুখী উন্নয়ন চলুক। তখন জাতীয় সম্পদের অপব্যয়, অপচয় এত বেশি হবে না, সিস্টেম লসও সীমা ছাড়াবে না। কারণ সুশিক্ষাপ্রাপ্ত সুনীতির একজোড়া উন্নত হাত আর কুটিল বুদ্ধিতে ভরা চোরা হাত কোনোক্রমেই এক হতে পারে না। আমরা দেশের টাকা খরচ করে কৌশলী চোর-ডাকাত কিংবা কুখ্যাত পকেটমার কোনোভাবেই তৈরি করার পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিতে পারি না।
পেশাগত কারণে অনেক সময়ই বিভিন্ন সেমিনার, কনফারেন্সে যেতে হয়, নানা জনের নানা কথা শুনতে হয়, বলতে হয়। দেখেছি, যিনি যে দেশে লেখাপড়া করে এসেছেন, তাদের অনেকেই সে দেশের সংস্কৃতি, সামাজিক বুনন, চিন্তাধারা, মূল্যবোধ, লেখাপড়ার সিলেবাস হুবহু নকল করে, কপি অ্যান্ড পেস্ট করে এ দেশে চালু করে দেশকে সে দেশ বানাতে চান, উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যাওয়ার নুশকা বাতলান।
আমি বরাবরই এতে দ্বিমত পোষণ করি। পশ্চিমা সভ্যতার হুবহু অনুকরণ করতে গিয়ে এ দেশের ছাত্রসমাজ ও যুবসমাজ খুব ভোগবাদ-ক্লান্ত, দিগভ্রান্ত, জীবনের উদ্দেশ্য-বিভ্রান্ত এবং নীতিভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্তঃসারশূন্য গন্তব্যের পেছনে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটতে ছুটতে তারা দিশেহারা। তাদের মধ্যে দেশীয় মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশি বাঙালি আজীবন এদেশীয় বাঙালি। প্রতিটি জাতির নির্দিষ্ট কিছু স্বকীয়তা রয়েছে; রয়েছে আলাদা সংস্কৃতি, সামাজিক বুনন, মনমানসিকতা, চিন্তাচেতনা।
অন্য কোনো দেশের ভালো কিছু থাকলে সেটা আমরা আত্মস্থ করতে পারি, দেশের উপযোগী করে গ্রহণ করতে পারি। নিজেদের অস্তিত্বকে বিলীন হতে দিতে পারিনে। জাতি গঠনে এটাও একটা শিক্ষা। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী তার অস্তিত্ব রক্ষায় এবং ক্রমবিকাশে নিজস্ব সংস্কৃতি, চিন্তাচেতনা, দেশীয় মূল্যবোধ, আত্মোন্নয়ন ও দেশ গড়ার উপযোগী শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাক-এটাই সর্বোত্তম পন্থা।
লেখক: প্রফেসর ড. হাসনান আহমেদ : প্রাবন্ধিক ও গবেষক