স্কুলে ইয়েস স্যারের বদলে 'জয় হিন্দ' - Dainikshiksha

স্কুলে ইয়েস স্যারের বদলে 'জয় হিন্দ'

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গুজরাতের আহমেদাবাদ শহরের পরিমল বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র পাঞ্চাল হর্ষ। প্রতিদিনের মতোই শিক্ষক ক্লাসে এসে রোল কল করছিলেন। এতদিন নাম ডাকলেই 'ইয়েস স্যার' বা 'প্রেজেন্ট প্লিজ' বলাটাই রীতি ছিল।

কিন্তু পয়লা জানুয়ারি পাঞ্চালের নাম ডাকার সঙ্গে সঙ্গেই সে উঠে দাঁড়িয়ে হাত মুঠো করে বলল, "জয় হিন্দ, জয় ভারত"।

এভাবেই স্কুলের পড়ুয়াদের নিজের উপস্থিতি জানান দিতে হবে পয়লা জানুয়ারি থেকে - এমনই নির্দেশ জারী করেছে গুজরাতের শিক্ষা দপ্তর। "আমাদের স্কুলেও নির্দেশ এসেছে যে ছাত্রছাত্রীরা রোল কলের সময়ে এখন থেকে ইয়েস স্যার বা প্রেজেন্ট প্লিজ না বলে জয় হিন্দ জয় ভারত বলবে। আমরা ছাত্রদের বুঝিয়েছি যে কেন জয় হিন্দ জয় ভারত বলাটা উচিত,"  বলছিলেন পরিমল বিদ্যালয়ের শিক্ষক কমলেশ প্যাটেল।

তাঁর কথায়, "নিজের দেশের প্রতি, নিহত সৈনিকদের প্রতি যে সম্মান দেখানোর জন্যই যে উপস্থিতির সময়ে জয় হিন্দ জয় ভারত বলা উচিত, সেটা ছাত্রদের আজকেও বুঝিয়েছি আমি। দেশের প্রতি ভক্তি নিঃসন্দেহে বাড়বে এই নিয়মের ফলে।"

সরকারি নির্দেশেও বলা হয়েছে যে ছাত্রদের মধ্যে দেশ ভক্তির ভাবনা দৃঢ় করতেই 'জয় হিন্দ জয় ভারত' বলার নিয়ম চালু করা হচ্ছে। গুজরাতের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের নির্দেশক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের জারী করা ওই নির্দেশে বলা হয়েছে যে সব সরকারি, বেসরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলোতে জানুয়ারি মাসের এক তারিখ থেকে এই নিয়ম চালু করতে হবে।

কারণ হিসেবে বলা হয়: "কম বয়স থেকেই তাদের মনে দেশভক্তির চেতনা প্রসারিত করা যায়।"

হিন্দু পুনরুত্থানবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আর এস এসের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ, এ বি ভি পি-র রাজস্থানের এক শিক্ষককে সম্মানিত করেছে, যিনি নিজের স্কুলের ছাত্রদের রোল কলের সময়ে জয় হিন্দ এবং জয় ভারত বলা অভ্যাস করিয়েছেন।

সেই উদাহরণ টেনেই গুজরাতের শিক্ষা দপ্তর তাদের রাজ্যের প্রতিটা স্কুলেই ছাত্রদের জয় হিন্দ জয় ভারত বলা বাধ্যতামূলক করেছে। "কিন্তু এভাবে কি ছাত্রদের মনে দেশভক্তির চেতনা আনা যায়? জবরদস্তি নিয়ম চালু করে ছাত্রদের মনে দেশের প্রতি, সৈনিকদের প্রতি ভক্তি জাগানো যায় না কখনই," বলছিলেন আহমেদাবাদের বাসিন্দা, ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রের বাবা সজীব রঞ্জন।

তিনি বলেন, "দেশের প্রতি ভক্তি আগেও ছিল, এখনও আছে। এই সরকার শুধু দেখনদারিতেই ব্যস্ত। জয় হিন্দ জয় ভারত বলার নিয়ম চালু না করে পঠনপাঠনের সুব্যবস্থা করা উচিত সরকারের।" 

"পড়াশোনার এত খরচ কেন বাড়ছে, স্কুলে বাচ্চারা কেন অনিয়মিত, সেই সব দিকে নজর না দিয়ে দেশভক্তির দেখনদারী করা হচ্ছে," যোগ করেন মি. সজীব রঞ্জন।

কিন্তু স্কুল শিক্ষক কমলেশ প্যাটেল বলছেন, "অন্যদিন ইয়েস স্যার বলার সময়ে ছাত্ররা যেরকম নির্লিপ্ত থাকত, আজ তাদের মুখে চোখে একটা খুশির ভাব লক্ষ্য করেছি আমি।"

ছাত্রদের মুখে-চোখে সেই খুশির ভাব কতটা সত্যিই দেশভক্তির চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, আর কতটা নিয়মের বেড়াজালে, সেটা নিয়ে মি. রঞ্জনের মতো অনেকেই অবশ্য সন্দিহান।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033109188079834