অঞ্চলভিত্তিক উদ্ভাবনী প্রকল্প ও পরিকল্পনা - দৈনিকশিক্ষা

অঞ্চলভিত্তিক উদ্ভাবনী প্রকল্প ও পরিকল্পনা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি নবীন বিসিএস সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সমাপনী সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা ও জেলার উন্নয়নে উদ্ভাবনী পরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, উদ্ভাবনী পরিকল্পনা একটি উপজেলাকে বদলে দিতে পারে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এমন পরিকল্পনা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি। উন্নয়ন পরিকল্পনায় বটম টু টপ অ্যাপ্রোচ উন্নয়নের বড় সোপান। পৃথিবীর বহু দেশে এমনভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, উন্নয়ন সম্পর্কে একটি জনপ্রিয় মতবাদ আছে, তা হলো উন্নয়ন জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা অর্থাৎ অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন। আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে তা-ই হয়, তবে ব্যাপকভাবে প্রণয়ন করলে উন্নয়ন পরিকল্পনায় মানুষের অংশগ্রহণ ও সমর্থন বাড়ে। এত দিন আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুধু তৃণমূল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের কাজ মনে করতাম। কিন্তু আমাদের কাছে মনে হচ্ছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের একক ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব দিলে তাঁরাও পরিকল্পনা প্রণয়নে অবদান রাখতে পারেন। তিনি একটি উপজেলা কিংবা জেলার প্রধান। সরকারের অন্য কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করলেও জবাবদিহির জায়গা নির্বাহী প্রধানের কাছে। অন্য কর্মকর্তাদের কাজ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সার্বিক কাজের সাফল্য লাভ করা হয়। আর নিজ থেকে উদ্ভাবনীমূলক কোনো কাজ করা এবং তা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মানুষের উন্নয়নে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়। এভাবে স্থানীয় মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে একজন সরকারি কর্মকর্তা অবদান রাখতে পারেন।

ভৌগোলিক বিচারে আমাদের সমতল, পাহাড় ও হাওরবেষ্টিত অঞ্চল রয়েছে। আবার প্রতিটি অঞ্চলের মধ্যেও রয়েছে অনেক মিল-অমিল। ফলে উন্নয়ন পরিকল্পনা ভিন্ন হওয়া দরকার। এ তো গেল অঞ্চলের কাঠামোগত বিন্যাস তারপর রয়েছে একেক এলাকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, অভ্যাসসহ বিভিন্ন ভিন্নতা। রয়েছে মাটির গুণাগুণের ভিন্নতা। ভিন্ন মানুষের জীবনাচার ও ধরন। ফলে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে এগুলো বিবেচনায় না আনলে বাস্তবায়নে সমস্যা হতে পারে। নিজ নিজ এলাকার মানুষের প্রয়োজন উপযোগী এবং কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই ছোট ছোট প্রকল্প প্রণয়ন করলে তাদের সক্রিয় ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং কাজের প্রতি নিদারুণ আগ্রহ তৈরি হওয়া সহজ হয়।

আমাদের সমতলের মানুষের জন্য সব ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা সহজ হতে পারে কিন্তু সেখানেও উপযোগিতা ও উদ্ভাবনী অর্থাৎ গতানুগতিকতার বাইরে আরো বেশি ফলদায়ক প্রকল্প গ্রহণ করলে মানুষের দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব হতে পারে। পাহাড়ি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য তাদের উপযোগী শিক্ষা, কৃষি ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। আবার হাওর অঞ্চল বছরের অর্ধেক সময় পানিতে ডুবে থাকে। এ সময়ে তাদের শিক্ষা ও বিকল্প কর্মসংস্থান কিভাবে করা যায় তার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। আমাকে মনে রাখতে হবে চা শ্রমিকদের জন্য যেমন পরিকল্পনা দরকার ঠিক তেমন পরিকল্পনা হাওর অঞ্চলের মানুষের জন্য কার্যকর হবে না।

কেননা তাদের প্রত্যেকের রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। অঞ্চলভেদে যুবক ও মহিলাদের জন্য বিশেষায়িত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও যেতে পারে। বিশেষায়িত প্রকল্প গ্রহণের জন্য প্রথম প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকদের সম্পর্কে ভালো ধারণা অর্জন করা। একজন ইউএনও উপজেলা পর্যায়ে কাজ করেন। তাঁর রয়েছে স্থানীয় মানুষের সম্পর্কে জানাশোনা। ফলে তাঁর পক্ষে একটি উপজেলার জন্য উপযোগী প্রকল্প ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা সহজ হয়।

আমাদের চৌকস ও মেধাবী কর্মকর্তারা যাঁরা তাঁদের মেধা, শক্তি ও সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে ছোট ছোট উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেন, যা সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ এবং দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন জনবান্ধব প্রশাসন। শুধু শাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ না হয়ে প্রকৃত জনগণের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতা থাকলে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে সহজে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন অবধারিত।

দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের জন্য কর্মসংস্থান আজ বড় জরুরি। জীবিকার সন্ধানে শহরমুখী মানুষের স্রোত কমাতে হলে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান বড় প্রয়োজন। আর এর জন্য দরকার উপযোগিতার। স্থানীয় ও জাতীয় চাহিদা পূরণের জন্য যুবক ও মহিলাদের আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে যুক্ত করা দরকার। এর মাধ্যমে আমরা দারিদ্র্য বিমোচন করতে পারি।

 লেখক : ড. নিয়াজ আহম্মেদ, অধ্যাপক, সমাজকর্ম বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, [email protected]

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037219524383545