অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলেই লাল তারকা পাবে বিশ্ববিদ্যালয়

অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলেই লাল তারকা পাবে বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়া প্রোগাম ও কোর্স পরিচালনা এবং অনুমোদিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে লাল তারকা (কালো তালিকাভুক্ত) প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়া প্রোগাম ও কোর্স পরিচালনা এবং অনুমোদিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে লাল তারকা (কালো তালিকাভুক্ত) দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ইউজিসির সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

ইউজিসির ওয়েবসাইটে যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্নিত করা হবে সেখানে শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তি না হতে পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। অনুমোদিত প্রোগ্রাম ও এর আসন সংখ্যা নিশ্চিত হয়ে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে উচ্চশিক্ষার দেখভালের দায়িত্ব থাকা প্রতিষ্ঠানটি। 

তাছাড়া কমিশনের অনুমোদনহীন ভবন ও ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, ছয় মাসের অধিককাল যাবৎ আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার না থাকা, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের মালিকানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বসহ অন্যান্য সমস্যার কারণেও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে লাল তারকা প্রদান করা হবে।

সম্প্রতি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দের সভাপতিত্বে বেসরকারি বিশ্ববদ্যিালয় বিভাগের সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শিগগিরই এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে অবহিত করা হবে। 

এ বিষয়ে ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, অনুমোদিত আসনের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করার কোন সুযোগ নেই। কোন বিশ্ববিদ্যালয় এটি করে থাকলে তা আইনগতভাবে বৈধ হবে না। অতিরিক্ত ভর্তি হওয়া এসব শিক্ষার্থীর সনদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে।

এছাড়া, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইউজিসি’র একজন সদস্যকে প্রধান করে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার ও বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে গতকাল কমিশনে তলব করা হলে তারা কোন উত্তর দিতে পারেন নি।

বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ইউজিসি’র থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হয়। শিক্ষক সংখ্যা ও ল্যাব সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয় কমিশন। ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো প্রোগ্রামে এক সেমিস্টারে শেসনে ৯০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি ও যথাযথভাবে শিক্ষাদান করার সক্ষমতা বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোন বিশ্ববিদ্যালয়েরই নেই বলে অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।   

উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামে অনুমোদিত আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে তা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি ও অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ওয়েবসাইটে এসকল বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে লাল তারকা দিয়ে চিহ্নিত করা হবে।