অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলা : একবছরে দাখিল হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন - দৈনিকশিক্ষা

অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলা : একবছরে দাখিল হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

রাজশাহী প্রতিনিধি |

অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে টেনে-হিঁচড়ে পুকুরে ফেলার ঘটনায় এক বছরের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। তবে মামলার তদন্ত চলছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে পুলিশ। আর মামলার সার্বিক বিষয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ। 

অধ্যক্ষ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কয়েক দফা চিঠি দিয়েছে। কোনদিন সরাসরি বা ফোন করেও যোগাযোগ করেনি। এই মামলার তদন্ত নিয়ে আমি হতাশ।’

এর আগে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২ নভেম্বর রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে টেনে-হিঁচড়ে পুকুরে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনায় দিন রাতে ছাত্রলীগের সাতজন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ জনকে আসামি করে চন্দ্রিমা থানায় মামলা দায়ের করেন অধ্যক্ষ।

ওই রাতেই পুলিশ নগরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৫ জনকে আটক করে। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পাঁচজনকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। 

অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলের ঘটনায় ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়। অভিযুক্ত পলিটেকনিক ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন ওরফে সৌরভকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মত কর্মসূচি পালনও করেন। এতে উত্তাল হয় পুরো ক্যাম্পাস। এমন ঘটনার দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, এ ঘটনায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধেই নেয়া হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। 

এর মধ্যে চার শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারা হলেন, ঘটনার মূল হোতা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ২০১৫-১৬ সেশনের কম্পিউটার বিভাগের ৮ম পর্বের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন ওরফে সৌরভ, একই সেশনের ইলেকট্রো মেডিক্যাল বিভাগের ৭ম পর্বের শিক্ষার্থী রায়হানুল ইসলাম, ২০১৭-১৮ সেশনের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ৫ম পর্বের ছাত্র মুরাদ হোসেন ও ২০১৮-১৯ সেশনের মেকানিক্যাল বিভাগের ৩য় পর্বের শিক্ষার্থী সাজিব হোসেন। 

এ ঘটনায় সরাসরি জড়িতের প্রমাণ মেলায় প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা পাঁচ শিক্ষার্থীর মূল সনদসহ অন্য কাগজপত্র আগামী তিন বছরের জন্য স্থগিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এরা হলেন, ইনস্টিটিউটের ২০১৫-১৬ সেশনের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের ছাত্র কৌশিক জামান ওরফে বনি, ইলেকট্রো-মেডিক্যাল বিভাগের সালমান রহমান ওরফে টনি, পাওয়ার বিভাগের সাব্বির আহম্মেদ, মেকাট্রনিক্স বিভাগের হাসিবুল হাসান ও কম্পিউটার বিভাগের মারুফ হোসেন।

এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার দায়ে সাত শিক্ষার্থীকে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। এরা হলেন, ২০১৫-১৬ সেশনের পাওয়ার বিভাগের ৬ষ্ঠ পর্বের (অকৃতকার্য) নাঈম ইসলাম, ২০১৬-১৭ সেশনের ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের ৭ম পর্বের প্লাবন কুমার কুন্ডু, মেকাট্রনিক্স ৭ম পর্বের মেহেদী মাহমুদ, মেকানিক্যাল বিভাগের ৭ম পর্বের মেহেদি হাসান, ২০১৭-১৮ সেশনের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ৫ম পর্বের ওমর আজিজ, ২০১৮-১৯ সেশনের ৩য় পর্বের কম্পিউটার বিভাগের মাহবুবুর রহমান ও পাওয়ার ৩য় পর্বের মাসুদ রানা মীম। সেই সময় ইনস্টিটিউটের রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া ছাত্রলীগের টর্চারসেল হিসেবে পরিচিত ইনস্টিটিউটের ১১১৯ নম্বর কক্ষটি ভেঙে ফেলে সেখানে কমনরুম বাড়ানোরও সুপারিশ করা হয়েছে। 

এবিষয়ে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ২ তারিখে ঘটনার পরে ১৮ তারিখে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়। তার পরে মামলাটি ডিবিতে যায়। এরপরে ৫ জনকে আটক করা হয়। নতুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা একবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনি। তিনি কারো সঙ্গে কথাও বলেনি। কয়েকবার চিঠির মাধ্যমে তথ্য চেয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আমি কোনো উত্তর দেয়নি। আমার আপসোস লক্ষ্মীপুর থেকে আমার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দুই কিলো হবে। তারপরেও ফোন বা সরাসরি যোগাযোগ করেনি। মামলা নিয়ে আমি হতাশ।’

১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে। 

এবিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিন পুলিশের মূখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। তবে মামলার তদন্ত চলছে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলি হয়েছে। নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করছেন।

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063059329986572