দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সব সরকারি অফিস স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জনজীবন হয়ে পড়েছে স্থবির। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন এমপিও সুবিধার বাইরে থাকা বেসরকারি কলেজগুলোর অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা। কোচিং-টিউশনি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালানোর বিকল্প রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে তাদের। তাই সরকারের কাছে বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। দৈনিক শিক্ষাডটকমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান।
বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মোড়ল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বেতন-ভাতা কলেজ ফান্ড থেকে দেয়া হবে বলে অঙ্গীকার করিয়ে শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হয়। তাই কলেজগুলো শিক্ষকদের যা ইচ্ছা তাই বেতন দিচ্ছে। কোথাও তিন হাজার, কোথাও পাঁচ হাজার, আবার কোথাও ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেতন দেয়া হচ্ছে। তাই অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে কিছু টাকা আয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। বিকল্প পন্থা হিসেবে শিক্ষকরা কোচিংয়ে ক্লাস নেয়া, টিউশনি করা, ইজি বাইক চালানো, দিনমজুরসহ বিভিন্ন বিকল্প রোজগারের পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মানুষকে ঘর বন্দী থাকতে বাধ্য করেছে। ফলে এসব শিক্ষকদের সংসার পরিচালনার বিকল্প পথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। রোজগার না থাকায় সন্তান পরিজন নিয়ে সংসার পরিচালনা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়েছে তাদের জন্য। না পারছেন কারো কাছে হাত পাততে, না পারছেন লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে। এ করুণ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। এমপিওবঞ্চিত অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকদের জন্য দুর্যোগকালীন বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিনীত অনুরোধ করছি। এছাড়া দ্রুত জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দূরাবস্থা নিরসনের দাবি জানাচ্ছি।
অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা জানান, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে কর্মরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ রাখা হয়নি। এরফলে এমপিও বঞ্চিত হয়েছেন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা। অথচ মাদরাসা জনবল কাঠামোতে মাস্টার্স সমতুল্য কামিল পর্যায় পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শিক্ষকরা আরও জানান, জটিলতা সৃষ্টির পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কর্মকর্তার জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ সমূহে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও দেয়ার আবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অগ্রায়ন করা হলেও আজও সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাই, এমপিওভুক্তির ঘোষণা দাবি করেছেন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা। একই সাথে দুর্যোগকালীন সময়ে বিপদে পড়ার শিক্ষকদের বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।