অনুমোদন, ভবন কিছুই নেই তবুও চলছে ভর্তি - দৈনিকশিক্ষা

অনুমোদন, ভবন কিছুই নেই তবুও চলছে ভর্তি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি |

অনুমোদন নেই, নেই কোনো নিজস্ব ভবন। তবুও সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজের নামে চলছে ছাত্রছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম। অপর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইনবোর্ড টানিয়ে এসএসসি (ভোকেশনাল) শাখার ৩টি ট্রেডে অনুমোদন ছাড়াই ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে।

এদিকে জালিয়াতি ও ভুয়া কাগজের মাধ্যমে স্থাপিত ‘সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজ’ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ শহরের রহমতিয়া হোসেন নামের এক শিক্ষক বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যার অনুলিপি শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সচিব, কারিকুলাম পরিচালক ও পরিদর্শক বিভাগের পরিদর্শক বরাবর পাঠানো হয়েছে।

ওই অভিযোগে উল্লে­খ করা হয়েছে, সদর উপজেলার রাণীগ্রাম মৌজার জেএল নং-১৫৩, দাগ নং-২০৫৭, কোড নং-২৫২০২ এই ঠিকানায় ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজের বিএম শাখার অ্যাফিলিয়েশন প্রদান করে।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরিচালক (প্রকাশনা) ও সিরাজগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ পরিদর্শন করেন। প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে এসে উপরোক্ত ঠিকানায় এর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাননি পরিদর্শকগণ।

অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এ বিষয়ে পরিদর্শকগণ সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেননি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এম জাহাঙ্গীর আলম প্রতিষ্ঠানটির পরিদর্শনের জন্য বারবার চেষ্টা করলে গত জানুয়ারী মাসে পুনরায় পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তাগণ। এসময় প্রতিষ্ঠান প্রধান জাহাঙ্গীর আলম সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৯নং কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের চর বনবাড়িয়ায় জাহিন প্রি-ক্যাডেটের একটি টিনের ঘরে ওই প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড টানিয়ে পরিদর্শকগণকে দেখান।

অভিযোগে আরও জানা যায়, সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজ-২৫২০২, রাণীগ্রাম, পো. পৌরসভা উপজেলাঃ সদর, জেলাঃ সিরাজগঞ্জ ২০১১ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়। এরপর পাঠদানের জন্য দুইবার পরিদর্শন আসলেও ভাড়া বাড়ির কারণে প্রতিষ্ঠানটি পাঠদানের অনুমতি পায়নি।

২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠানের তথাকথিত সভাপতি টাঙ্গাইলের বাসিন্দা এম. জাহাঙ্গীর আলম ও অধ্যক্ষ মো. সাদিকুর রহমান জুয়েল জাল-জালিয়াতি ও লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বানিজ্যেও মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (রাণীগ্রাম) এর প্রত্যয়ন মোতাবেক দেখা যায় যে, রাণীগ্রাম মৌজায় সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজ-২৫২০২, এই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। শুধু তাই নয় বাকাশিবোর অনুমতি ছাড়াই রানীগ্রাম মৌজা থেকে স্থান পরিবর্তন করে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের প্রি-ক্যাডেটে সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজে ভর্তিসহ নানা কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন। জাল-জালিয়াতি ও ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অনুমোদনপ্রাপ্ত “সিরাজগঞ্জ কারিগরি স্কুল ও বিএম কলেজের যাবতীয় বিষয়াদি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সিরাজগঞ্জবাসী।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি জরুরি কাজে ঢাকায় আছি। পরে কথা বলবো।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. সাদিকুর রহমান জুয়েল জানান, অনুমোদন হয়নি তবে অনুমোদনের জন্য চেষ্টা চলছে। অনুমোদন না নিয়েই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি সম্বলিত লিফলেট ছাড়া হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

সিরাজগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেন জানান, শহরের রানীগ্রামে প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিয়ে কালিয়া হরিপুরের চর বনবাড়িয়া গ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো অপরাধ। শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন ছাড়া এটা করাও বেআইনি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের উপ-পরিচালক (প্রকাশনা) মোহাম্মদ আবু সাঈম মুঠোফোনে জানান, অনুমোদন ছাড়া ভর্তি কার্যক্রমের প্রশ্নই উঠে না। তবুও যদি তারা ভর্তি কার্যক্রম চালায় তাহলে তদন্ত পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029909610748291