বয়স্কদের তুলনায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ২১ শতাংশ কম। আর সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার এই ঝুঁকি তার চেয়ে তিনগুণ বেশি। এছাড়া ২০ থেকে তার বেশি বয়সীদের সংক্রমিত হওয়ার হার এর মাঝামাঝি।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের মহামারি বিশেষজ্ঞদের এই সংক্রান্ত একটি গবেষণার ফল সম্প্রতি নেচার মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষকরা তাদের এ সংক্রান্ত গবেষণায় রোগের ঝুঁকি এবং বয়সের সঙ্গে এর সম্পর্ক বের করতে সংক্রমণ মডেল ব্যবহার করেছে। খবর সিএনএন।
সমীক্ষায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ২১ শতাংশের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে দেখেছে তারা। এছাড়া সত্তরোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৬৯ শতাংশ। এছাড়া বিশ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই হার রয়েছে মাঝামাঝি পর্যায়ে।
চীন, জাপান, ইতালি, সিঙ্গাপুর, কানাডা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মহামারি সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলছেন, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা শিশু ও কিশোরদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম। আক্রান্ত হলেও তাদের অবস্থা অন্যদের চেয়ে কম গুরুতর হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, কিছু শিশু করোনায় অসুস্থ হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক। সিডিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়।
গবেষণা নিবন্ধের লেখকরা বলছেন, উপসর্গ দেখা না দেওয়া (অ্যাসিম্পটোমেটিক) রোগীদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার; তবে বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণ রোধের পদক্ষেপগুলোয় এতে সামান্য প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত যদি অ্যাসিম্পটোমেটিক রোগীদের থেকে সংক্রমণ কম হয়।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শিশুদের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকা নিয়ে সরাসরি প্রমাণের ক্ষেত্রে মিশ্র ফল পাওয়া গেছে। তবে এটি সত্য হলে সামগ্রিকভাবে বিশ্বে কম সংক্রমণ হতে পারে।
মার্কিন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও এপিডিমিওলজির অধ্যাপক মার্ক উলহাউস বলেন, শিশু-কিশোরদের সংক্রমণের ঝুঁকি কম এবং সংক্রমিত হলে লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলে গবেষণায় দেখা গেছে। তবে সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা কেমন তা গবেষকরা নির্ধারণ করতে পারেননি।
