অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা: ৪ শিক্ষিকা বহিষ্কার - Dainikshiksha

অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা: ৪ শিক্ষিকা বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক |

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢোকার আগে নারী পরীক্ষার্থীদের অন্তর্বাস ও ছেলেমেয়ে উভয়ের জিনসের প্যান্টের ধাতব বোতাম খোলার ঘটনায় চার শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার ভারতের গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরালার কন্নুর জেলার পায়ানুরের কুনহিমঙ্গলাম এলাকার টিস্ক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সামনে আজ বিক্ষোভ করে বেশ কয়েকটি সংগঠন। এর পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই চার শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি-কাম-এন্ট্রান্স টেস্ট (এনইইটি) নামে মেডিকেল ভর্তির পরীক্ষার সময় গত রোববার কুন্নুর জেলায় আজব এক নির্দেশের মুখে পড়ে বিব্রত হন নারী পরীক্ষার্থীরা। সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের (সিবিএসই) পরিচালনায় এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষাকেন্দ্র কোনো ধাতব পদার্থ নিয়ে ঢোকা যাবে না—এমন নির্দেশের কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ওই নির্দেশের কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে নারী পরীক্ষার্থীদের কাউকে খুলতে হয়েছে অন্তর্বাস, কাউকে জিনসের প্যান্ট বদল করতে হয়েছে আর কাউকে বা প্যান্টের ধাতব বোতাম ও কানের দুল খুলতে হয়েছে। হয়রানির শিকার হয়েছেন পুরুষ পরীক্ষার্থীরাও।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ওই দিনই জেলা পুলিশ প্রধানের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। রাজ্য বিধানসভার সদস্যরাও এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিস্ক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘রোববারের ঘটনায় চার শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী পরীক্ষার্থী বলেন, কন্নুর জেলার টিস্ক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে তাঁর অন্তর্বাসে ধাতব হুক থাকায় মেটাল ডিটেক্টরে তা ধরা পড়ে। এ কারণে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে তা খুলতে বলেন। পরে অন্তর্বাস খুলতে তাঁকে বাধ্য করা হয়।

রেণুকা নামের এক পরীক্ষার্থীর মা বলেন, ‘এটা খুবই অমানবিক। পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢোকার আগে আমার মেয়েকে তাঁর ওপরের অংশের অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করা হয়েছে। পরীক্ষা দিতে হবে, তাই বাধ্য হয়েই সে তা খুলে পরীক্ষার হলে ঢুকেছে। আমি একজন শিক্ষক, তাই তরুণ-তরুণীদের মানসিকতাটা বুঝতে পারি। এ ঘটনা অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলেছে। এ ব্যাপারে আমরা আইনগত পদক্ষেপ নেব।’

আরেক পরীক্ষার্থীর বাবা রাজেশ নামবিয়ার বলেন, তাঁর মেয়ে জিনসের প্যান্ট পরে এসেছিলেন। সেই প্যান্টে ধাতব বোতাম থাকায় তা বদল করেই তাঁকে পরীক্ষার কেন্দ্র ঢুকতে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, অনেক মেয়ে লম্বা হাতার জামা পরে এসেছিলেন। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে সেই জামার হাতা কাঁচি দিয়ে কেটে ছোট করে দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকের আশপাশে কোনো প্রসাধন কক্ষও ছিল না। এ অবস্থায় আমাকে অন্তর্বাস খুলতে বলা হয়। পরে উপায় না পেয়ে সেখানেই কোনোমতে সেটি খুলে বাইরে অপেক্ষায় থাকা মায়ের হাতে দিই। এটা খুবই অপমানজনক একটি ঘটনা।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোববার দেশের শতাধিক শহরে অভিন্ন এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের সামনে অসংখ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ পরীক্ষায় গাঢ় রঙের পোশাক, ফুলহাতা শার্ট, বড় বোতাম, ধাতব বোতাম ও হুক নিষিদ্ধ করা হয়

হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্য জে প্রমীলা দেবী নিন্দা জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের কাছেও তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। পরে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন একটি মামলা দায়ের করেছে। সেখানে সিবিএসই’র আঞ্চলিক পরিচালককে এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ - dainik shiksha বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043809413909912